বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনার, ৫৭ তলা ভবনের সমান উচ্চতা- মসজিদের ছাদে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ২০১টি কারুকার্যময় গম্বুজ। তাই ২০১ গম্বুজ মসজিদ নামেই পরিচিত। ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নগদা শিমলা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে ঐতিহাসিক মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ ব্যয় আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা।
১৫ বিঘা জায়গার ওপর এই মসজিদের নকশা করা হয়েছে ২০১টি গম্বুজ ও ৯টি মিনার দিয়ে। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের ছাদে ১০১ ফুট উচ্চতার একটি গম্বুজ রয়েছে। চারপাশে ছোট ছোট গম্বুজ আছে ২০০টি এগুলোর প্রত্যেকটির উচ্চতা ২৩ ফুট। মূল মসজিদের চার কোণায় রয়েছে ৪টি মিনার। এগুলোর প্রত্যেকটির উচ্চতা ১১১ ফুট। পাশাপাশি আরও চারটি মিনার আছে ১০১ ফুট উচ্চতার। সবচে উঁচু মিনারটি মসজিদের পাশেই অবস্থিত উচ্চতা ৪৫১ ফুট যা একটি ৫৭তলা ভবনের সমান।
১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৬৫ ফুট প্রস্থের দ্বিতল এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায়
১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মসজিদের ভিতরের দেয়ালে পবিত্র কোরআন শরীফের ৩০ পারা আয়াত ৬শ ৬১টি থালায় পিতলে খচিত করে রাখা হয়েছে। মসজিদের প্রধান দরজা নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় ৫০ মণ পিতল। মসজিদের প্রধান ফটকে মহান আল্লাহ পাকের ৯৯টি নাম পিতল দিয়ে খচিত। মসজিদের টাইলসসহ ফিটিংস এর যাবতীয় শোভা বর্ধনের সৌখিন কারুকার্য খচিত পাথর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয়েছে। দেয়াল ও মেঝেতে ব্যবহারের জন্য ইতালি ও চীন থেকে উন্নত মানের মার্বেল পাথরের টাইলস আমদানি করা হয়েছে।
নির্মাণ কাজ শেষ হলে একসাথে এই মসজিদে ১৫ হাজার মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদকে ঘিরে ১৮ বিঘা জায়গার উপর হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে।মসজিদের নির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম ধর্মীয় অনুভূতি থেকেই জীবনের সকল উপার্জন দিয়ে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান।
ইতোমধ্যে মসজিদের প্রায় ৭৫শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। বাকি কাজ শেষ করতে দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য মো. হুমায়ুন কবির। এ মসজিদকে কেন্দ্র করে পাশেই গড়ে উঠেছে দোকান, হোটেল, রেস্তোরা এবং দূর দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের জন্য আবাসিক সুবিধা।
অত্যাধুনিক মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত দর্শনার্থী ছুটে আসছেন।
টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদে যেতে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দ্রুতগামী বাসে উঠে সরাসরি গোপালপুর বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে। প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার মিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘণ্টা। বাসস্টান্ড থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা ভ্যানে করে দশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মসজিদে পৌঁছাতে হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..