৫০ বছরেও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরঙ্গনাদের কষ্টের জীবন শেষ হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ২০১৭ সালে কেউ কেউ স্বীকৃতি পেলেও বাকিদের ভাগ্যে তাও জোটেনি। শুক্রবার রংপুরে এই বীর নারীদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পরিণত হয়েছিল কষ্ট-বেদনা আর তাদের যাপিত জীবনের কান্নার উৎসবে।
মৃত্যুর চেয়ে সম্ভ্রম হারানোর যন্ত্রণা কতো যে কষ্টের তার জ্বলন্ত উদাহরণ এ নারীরা। দখলদার বাহিনীর হাতে নির্যাতনের অদৃশ্য ক্ষত প্রায় ৫০ বছর ধরে বয়ে বেড়িয়েও সে যন্ত্রণা শেষ হয়নি। শুক্রবার রংপুর শিল্পকলা অডিটোরিয়ামে ছোট্ট আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে এসে ৩৭ নারী বললেন জীবনের গল্প। এমন এক একেকটা ট্র্যাজিক গল্প বয়ে বেড়াচ্ছেন সবাই।এক বীরঙ্গনা বলেন, যুদ্ধের পর খাবার বাসস্থান কিছুই পাইনি। আমাদের অনেকে ঘৃণা করছে। কারো বাসায় স্থান হয়নি। খুবই খারাপ সময় পার করেছি।
এদের মধ্যে ১৫ জন বীরঙ্গনা ২০১৭ সালে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে। বাকিরা এখনও যেন যুদ্ধ করে চলছেন সামান্য স্বীকৃতি টুকুর জন্য।
আরেক বীরঙ্গনা বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য ২০০৯ সালে আবেদন করেছি। ২০২১ সাল, এখন পর্যন্ত আমরা গেজেটভুক্ত হতে পারিনি। আমার মনে হয় ঘৃণিত নারী। সম্মাননা, অর্থ আর শীতের পোশাক উপহার দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে।মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ফিরোজা বেগম বলেন, অনেকেই কান্না করে, কিন্তু তাদের কেউ দেখা না। তাদের জন্য আমি মন্ত্রণালয় পর্যন্ত আবেদন করেছি। কিন্তু মন্ত্রণালয় স্বীকৃতি দিতে যথেষ্ট গড়িমসি করছে। ফিরে দেখার সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা সাকিল বলেন, আরও অন্য সব জেলা থেকে বীরঙ্গনাদের খুঁজে বের করে সম্মাননার ব্যবস্থা করব। প্রবাসী কবি সিনথিয়া খানের ‘প্রজাপতি মন’ কাব্যগ্রন্থের বিক্রয়লব্ধ অর্থে বীরঙ্গনাদের জন্য এ আয়োজন করেছিল সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন ‘ফিরে দেখা’।
এ জাতীয় আরো খবর..