প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ নিয়ে, সমাজ নিয়ে যখন ষড়যন্ত্র সফল হয় না, তখনই একটি শ্রেণি সমালোচনামুখর হয়। তিনি বলেন, একটি মহল দেশের সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। বাকস্বাধীনতার নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং গণমাধ্যমে অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কিছু আঁতেল শ্রেণির লোক আছে, যারা বিশৃঙ্খল সৃষ্টির জন্য অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলেই বাকস্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলে থাকেন তারা। তাহলে সংঘাত সৃষ্টি করাও কি বাকস্বাধীনতা? তিনি বলেন, তাই কেউ যদি অপপ্রচার করে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিবাদ আমাদের করতে হবে। আমরা চুপ করে বসে থাকলেও হবে না, ডিফেন্সিভ হলেও হবে না। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের শুরুতেই গণভবন থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষ থেকে ভার্চুয়াল এ বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে ২০২১ সালে সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন, গান্ধী আশ্রম (ট্রাস্টি বোর্ড) আইন, ২০২০-এর খসড়ার নীতিগত চূড়ান্ত ও উন্নয়ন বোর্ড আইনগুলো (বিলুপ্তকরণ) আইন, ২০২০-এর খসড়ার নীতিগত চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, যখনই বাংলাদেশ কোনো ভালো জায়গায় যাবে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেখানে বাংলাদেশ সম্পর্কে আগাম আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে, সেখানে বাংলাদেশ তার থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, এটা তাদের (তথাকথিত বুদ্ধিজীবী শ্রেণির) হয়তো পছন্দ হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা ভিক্ষুক হয়ে থাকব, তাদের কাছে হাত পাতবো, চেয়ে খাব- এটাই তো তারা চাইবে। কিন্তু আমরা তা থাকব না। দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের একটা শ্রেণি তো রয়েছেই, যারা সমাজকে বা সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, মানুষের জীবন নিয়েও তাদের চিন্তা নেই। কারণ, তাদের একটা অন্য উদ্দেশ্য থাকে। তাদের কন্ট্রোল করতে গেলেই বা তারা তাদের ষড়যন্ত্রটা সফল করতে না পারলেই সমালোচনামুখর হয়।
সরকারপ্রধান বলেন, যারা একটি সুন্দর পরিবেশকে নষ্ট করার জন্য বক্তব্য দেবে তাদের ধরলে (আটক করলে) এটা বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, এটা তো হয় না। সবারই দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকবে।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষও বলবে অপপ্রচারটা কখনও বাকস্বাধীনতা নয়। তবে এখন সোশ্যাল মিডিয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ডিজিটাল যুগ তাই, যার যা খুশি বলে যাচ্ছে, যা খুশি অপপ্রচার করে যাচ্ছে; আবার তাদের কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হৈচৈ এবং নানা কথা ছড়াবে। কিন্তু, কী কারণে হচ্ছে, সেটা তারা দেখছে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটার (বিসিএস) বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ব্যাগে যদি বড় বড় পাথর বা রামদা, কিরিচ এগুলো থাকে! সেখানে তো বই-খাতা পাওয়া যায়নি। সেটা নিয়ে কোনো কথা নেই। তখন তো অনেক নিউজও বের হয়েছে এবং অনেক ছবিও বের হয়েছে (মিডিয়া-পত্রিকায়)।
তিনি বলেন, সে সময় আওয়ামী লীগ অফিসে আক্রমণ এবং পাথর ছুড়ে মেরে অফিস ভাঙচুর এবং ৪০-৫০ নেতাকর্মীকে আহত করা, যাদের দেশে-বিদেশে চিকিৎসা করাতে হয়েছে এবং কারও কারও চিকিৎসা এখনও চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এটা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা কারও ছিল না। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগে যখন পুলিশ সেই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে গেল সেটাই সব থেকে বড় হয়ে গেল। অথচ পিলখানায় বিজিবি গেটের সামনে গ গোল করা হচ্ছিল, অনেকে বিজিবি গেট দিয়েও ঢুকে গিয়েছিল, কাজেই সেখানে বিজিবি যদি গুলি চালাত তাহলে কী অবস্থা হতো।