1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লায় ডি‌বির পৃথক অ‌ভিযা‌নে ইয়াবা ফে‌ন্সি‌ডিল আটক ৩ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত – এম সাখাওয়াত হোসেন দে‌শের প্রয়োজ‌নে বিএনসিসির সদস্যরা বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ কর‌বে – সেনাপ্রধান কু‌মিল্লায় সাংবা‌দিক‌দের সা‌থে পু‌লিশ সুপা‌রের মত‌বি‌নিময় নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপির র‍্যালিতে কৃষক দলের অংশগ্রহন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগ‌ঞ্জে বিএন‌পির র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

আমা‌দের দে‌শে ধর্ষ‌ণের শা‌স্তি ও অন‌্য দে‌শের ধর্ষ‌ণের শা‌স্তির ম‌ধ্যে পার্থক‌্য কতটুকু

কামাল হো‌সেন :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০
  • ৪৯০ বার পঠিত

সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ‌্যমে সিলেটের একাধিক ধর্ষ‌ণের ঘটনাসহ চল‌তি মা‌সের ৪ অক্টোবর নোয়াখালীর গৃহবধূর ওপর পৈশাচিক ঘটনা একাত্তরের পাকহায়েনাদের অত্যাচারকে হার মা‌নি‌য়ে‌ছে যা সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ‌্যমে আ‌ন্দোল‌নের ঝড় ও‌ঠে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ন‌্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম মানুষের বিবেককে প্রতিনিয়ত দংশন করছে। ধর্ষণ থে‌কে মু‌ক্তি চায় মানুষ।

স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ সমাজের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধা পর্যন্ত রেহাই পাচ্ছে না একশ্রেণির মানুষ রু‌পী জা‌নোয়ার‌দের হাত থেকে। কতটা অসহায় হয়ে পড়ছে সমাজ !

এ ধরনের ঘটনায় প্রচলিত ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের আইনি সহায়তা নিতেও নানাভাবে নাজেহাল হতে হয়। যথাযথ সাক্ষী পাওয়ার জটিলতা থেকে শুরু করে ক্ষমতাধর ব‌্যক্তি‌দের শেল্টারে থাকা অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হয়রা‌নির কারণে অনেক অভিভাবক আইনের আশ্রয় নিতে চান না । ফলে অনেক ঘটনা লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যায়। এরপরও একশ্রেণির জানোয়ার মানসিকতার বিক্রমশালী পুরুষের অযাচিত মুখরোচক কথাবার্তা ক্ষতিগ্রস্তদের আরও একবার ধর্ষণের মত নাজেহাল হতে হয়। এটাই বাস্তবতা।এখনো যারা বিচার পাচ্ছেন, তা মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ঘটনাগুলো সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলেই অনেকটা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু এভাবে কতদিন?

কিছু বিচার ও শাস্তির পরও এ অপরাধ প্রবণতা কমছে না। কিছুদিন বিরতি দিয়ে আবার ফুঁসে উঠছে হায়েনার দল। এদের কাছে ‘মা’ কি কোনো নারী নয়? এ জানোয়ারদের পিতা-মাতার ছবি ও সাক্ষাৎকার ব্যাপক আকারে মিডিয়ায় আসা দরকার। সন্তানের এ ধরনের কাজে বাবা-মা কতটুকু লজ্জিত,তাও জাতির সামনে আসা প্রয়োজন।

বিভিন্ন দেশে ধর্ষণের অপরাধে যেসব শাস্তির বিধান আছে, তা এখানে একটু তুলে ধরছি-

চীন: ধর্ষণ প্রমাণ হলেই আর কোনো সাজা নয়, বিশেষ অঙ্গ কর্তন এবং সরাসরি মৃত্যুদণ্ড। অন্য কোনো শাস্তি নেই।
ইরান: ধর্ষককে ফাঁসি, না হয় সোজাসুজি গুলি করে হত্যা। এভাবেই ধর্ষককে এদেশে শাস্তি দেওয়া হয়।
আফগানিস্থান: ধর্ষণ করে ধরা পড়লে চার দিনের মধ্যে ধর্ষকের মাথায় সোজা গুলি করে মারা হয়।
উত্তর কোরিয়া: অভিযোগ, গ্রেফতার আর তারপর অভিযোগ প্রমাণ হলে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সৌদি আরব: জুম্মার নামাজের পর ধর্ষককে প্রকাশ্যেই শিরচ্ছেদ করা হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাত: সাত দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মঙ্গোলিয়া: ধর্ষিতার পরিবারের হাত দিয়ে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মিশর: ধর্ষককে জনসমক্ষে ফাঁসি দেওয়া হয়।

শাস্তির মাত্রা দেখে বোঝা যায়; উপরের দেশগুলো এ অপরাধকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে। এতে ধর্ষণের মাত্রাও ওইসব দেশে খুব কম, প্রায় শূন্যের কোঠায়। মৃত্যুদণ্ড দিলে এর দুটি ভালো দিক আছে। প্রথমত বর্তমান অপরাধী নির্মূল হয়। দ্বিতীয়ত একই অপরাধের জন্য নতুন অপরাধী খুবই কম তৈরি হয়।

 আমাদের দেশে বর্তমানে  ধর্ষ‌ণের‌ অ‌ভি‌যোগ প্রমা‌নিত হ‌লে সং‌বিধান কি ?

১. যদি কোনো পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

ব্যাখ্যা: যদি কোনো পুরুষ বিবাহ বন্ধন ব্যতীত ষোলো বছরের অধিক বয়সের কোনো নারীর সহিত তাহার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাহার সম্মতি আদায় করিয়া, অথবা ষোলো বছরের কম বয়সের কোনো নারীর সহিত তাহার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত নারীকে ধর্ষণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।

২. যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যুন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

৩. যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ওই দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যুন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

৪. যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে-
ক. ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন;
খ. ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বৎসর কিন্তু অন্যুন পাঁচ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

৫. যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে কোনো নারী ধর্ষিতা হন, তাহা হইলে যাহাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্তরূপ ধর্ষণ সংঘটিত হইয়াছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ ধর্ষিতা নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরিভাবে দায়ী ছিলেন, তিনি বা তাহারা প্রত্যেকে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, অনধিক দশ বৎসর কিন্তু অন্যুন পাঁচ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যুন দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।

আমাদের দেশে ধর্ষণ প্রমানের জটিলতার কারণে অনেক প্রভাবশালী আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে যায়। ফলে প্রচলিত আইনকে আরও সময়োপযোগী করার বিকল্প নেই। প্রমাণ করার পদ্ধতিতে নারী যেন আবার নাজেহালের শিকার না হন, সেদিকটি বিবেচনায় আনা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয়ে আমরা নজর দিতে পারি, সেটা হচ্ছে ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াবেন না। অপরাধী তার কথা নিজেই বলবে। এভাবে তাকে নিঃসঙ্গ করে দিলে অন্যরাও দুষ্কর্ম থেকে নিবৃত হবে। এসব ব্যাপারে ধর্ষকের মা ও বোনের বক্তব্যও প্রচারে আনা দরকার।

এভাবে আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধে এ অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব। এ কাজ করার জন্য মিডিয়ার পাশাপাশি নারী সংগঠনগুলোকে আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার বিকল্প নেই। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আইনি সহায়তার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু এসব সুযোগ সম্পর্কে বহু অভিভাবক অথবা ক্ষতিগ্রস্তরা জানেন না। ফলে অনেকে ঝামেলা এড়াতে আদালতের শরণাপন্ন হতে চান না।

ধর্ষ‌ণের ঘটনা বে‌ড়ে যাওয়ার এক‌টি প্রধান কারন হল সর্বনাশা মাদক ইয়াবা 

সর্বনাশা ইয়াবা আস‌ক্ত হ‌য়ে ঐ‌শির ঘটনা আমা‌দের নিশ্চয় ম‌নে আ‌ছে। যারা  ইয়াবা সেবন ক‌রে একপর্যা‌য়ে সেবনকার‌ী‌রা উন্মাদ হ‌য়ে যায়, এ সময় তা‌দের হিতা‌হিত জ্ঞান বিলুপ্ত হ‌য়ে যায়, তারা নি‌জে‌দের প‌রিবার‌ের উপরও  নির্যাত‌নের ঘটনা ঘটায় ,এবং যে‌কোন অপ্রী‌তিকর ঘটনা থে‌কে শুরু ক‌রে ধর্ষ‌ণের মত অপরাধ খুব সহ‌জে ক‌রে ফে‌লে। আসুন আমরা সক‌লে স‌চেতন হই , সামা‌জিক ভা‌বে ধর্ষ‌ণের বিরু‌দ্ধে প্রতিবাদ ক‌রি। মাদক ব‌্যবসায়‌ি‌দের বিরু‌দ্ধে প্রতিবাদ ক‌রি, তা‌দের পু‌লি‌শের নিকট ধ‌রি‌য়ে দি‌তে হ‌বে। মাদক ক্রয় বিক্রয় কারী‌দের  সমা‌জ থে‌কে বিতা‌ড়িত কর‌তে হ‌বে। ‌মাদকমুক্ত বাংলা‌দেশ হ‌লে থর্ষ‌ণের মত অপরাধ অ‌নেকাং‌শেই হ্রাস পা‌বে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com