কুমিল্লা বরুড়ায় গণধর্ষণ মামলায় বরুড়া থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় ৩ ধর্ষককে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুত্র জানায়, বরুড়া থানায় দায়েরকৃত গণধর্ষণ মামলায় পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান পিপিএমের নির্দেশে বাদীর মেয়ে লিপি (ছদ্মনাম) ভিকটিম এর সাথে প্রায় ৬ বছর পূর্বে বিবাদী আবুল খায়ের এর বিবাহ হয়। বাদীর মেয়ের জামাই বিবাদী আবুল খায়ের প্রায়ই কাজ কর্ম না করে আজে বাজে চলাফেরা করে এবং খারাপ লোকদের সহিত চলাফেরা করিয়া মাদকাসক্ত হইয়া পড়ে। মাদকের টাকার জন্য প্রায়ই সময় বাদীর মেয়েকে বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ করার প্রস্তাব দেয়।
বাদীর মেয়ে তাহার কথাই রাজি না হয়ে বিষয়টি বাদীকে জানায়। বাদী তাহার মেয়ের জামাইকে ভবিষ্যতে এসব প্রস্তাব না দেওয়ার জন্য সর্তক করে দেয়। গত ১৫/০৪/২০২৪ইং তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ গত ১৬/০৪/২০২৪ইং তারিখ রাত অনুমান ০১.০০ ঘটিকার সময় ১নং বিবাদী মোঃ নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরা বাদীর মেয়ের বাড়ীতে যায়। তারপর বাদীর মেয়ের জামাই ৪নং বিবাদী আবুল খায়ের এর সহিত কি বিষয় নিয়া কথা বলে। রাত অনুমান ০১.৩০ ঘটিকার সময় বাদীর মেয়ের জামাই ৪নং বিবাদী আবুল খায়ের বাদীর মেয়ে ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার সাদিয়াকে বলে যে, বিবাদী নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরার সাথে শারীরিক মেলামেশা করিতে। বাদীর মেয়ে উক্ত কাজে অস্বীকৃতি জানাইলে বিবাদী আবুল খায়ের এর সহায়তায় বিবাদী নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরা বাদীর মেয়ে সুমাইয়া আক্তার সাদিয়াকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। একই তারিখ ভোর রাত অনুমান ০৫.০০ ঘটিকার সময় বাদীর মেয়েকে বরুড়া থানাধীন ০৮নং শাকপুর ইউনিয়নের শাকপুর সাকিনে উত্তরপাড়াস্থ বিবাদী নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরার বসত ঘরে নিয়া যায়। সেখানে নেওয়া পর বাদীর মেয়েকে গোসল করায় এবং বাদীর মেয়ের পরিহিত কাপড় চোপড় ধুয়ে ফেলে। তারপর ১৬/০৪/২০২৪ইং তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ গত ১৭/০৪/২০২৪ইং তারিখ রাত অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় বিবাদী নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরার পুনরায় বাদীর মেয়েকে তাহার বসত ঘরে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। সকাল বেলায় বাদীর মেয়ে পুনরায় গোসল করে ও তাহার পরিহিত কাপড় চোপড় ধুয়ে ফেলে। পরবর্তীতে গত ১৭/০৪/২০২৪ইং তারিখ রাত অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় ৪নং বিবাদী আবুল খায়ের সাথে আলাপ আলোচনা করে ১নং বিবাদী নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরা, ২নং বিবাদী মনির হোসেন এবং ৩নং বিবাদী মহিন উদ্দিনগন মিলে ৩নং বিবাদীর সিএনজি যোগে বাদীর মেয়েকে বরুড়া থানাধীন ১৩নং আদ্রা ইউনিয়নের নরিন্দ্রপুর সাকিনস্থ পাত্রে জমিতে সেচ দেওয়ার মেশিন ঘরে (সিএনজি ড্রাইভার ওহাব এর মেশিন ঘরে) নিয়ে যায় এবং রাত অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় ১,২ ও ৩নং বিবাদীগন ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার সাদিয়াকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে জোর পূর্বক ধর্ষন করে। ধর্ষণ শেষে বিবাদীগন বাদীর মেয়েকে ৩নং বিবাদী মহিন উদ্দিন এর সিএনজি করে একই তারিখ রাত অনুমান ১১.৩৫ ঘটিকার সময় শাকপুর নতুন বাজারে নিকট কালভাটের উপর নামাইয়া দিয়া উক্ত স্থান হইতে বিবাদীগন সিএনজিতে করিয়া চলিয়া যায়। উক্ত ঘটনা বাদী তাহার মেয়ের নিকট হইতে জানিয়া থানায় আসিয়া অভিযোগ দায়ের করিলে বরুড়া থানার মামলা নং-১২, তাং-১৯/০৪/২০২৪খ্রিঃ, ধারা- ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধনী/০৩) এর ৯(৩)/৩০ রুজু করা হয়।
মামলা রুজুর পরপরই পুলিশ সুপার মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে বরুড়া থানার চৌকস টিম ২০/০৪/২০২৪ইং তারিখ বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি ও বিশ^স্ত গুপ্তচরের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে বরুড়া থানাধীন শাকপুর এবং নরিন্দ্রপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করিয়া ঘটনার সহিত জড়িত এজাহার নামীয় ০৩ জন আসামী ১। মোঃ নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরা (৩০), পিতা-আব্দুল বারেক, মাতা-রফিয়া বেগম, সাং-শাকপুর (উত্তরপাড়া বটগাছ বাড়ী), ০৮নং শাকপুর ইউনিয়ন ২। মনির হোসেন (২২), পিতা-মৃত আবুল বাশার, মাতা-ফিরোজা বেগম, সাং-শাকপুর (পশ্চিম পাড়া হায়দার বাড়ী),পোঃ শাকপুর, ০৯নং ওয়ার্ড, ০৮নং শাকপুর ইউনিয়ন, ৩। মহিন উদ্দিন (৩৮), পিতা-মোঃ নুরুল আলম,মাতা-জেসমিন আলম,সাং-নরিন্দ্রপুর (মোল্লা বাড়ী), ১৩নং আদ্রা ইউনিয়ন,সর্ব থানা-বরুড়া, জেলা-কুমিল্লাদেরকে গ্রেফতার করেন। বিবাদীদেরকে গ্রেফতারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে বিবাদীগন গণধর্ষণ এর কথা স্বীকার করে। বিবাদীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হইতেছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।