রাজনৈতির নামে নানা কর্মসূচির নামে বিএনপি-জামায়াত গত তিন সপ্তাহে ১৮৬টি বাস-ট্রাক আগুনে পুড়িয়েছে। এগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাড়াতে হবে। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নিলে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘হরতাল-অবরোধ আর আগুন সন্ত্রাস: বন্ধ হোক এই অপরাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। গৌরব’৭১ ও স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। তিনি বলেন, বাসে-ট্রেনে আগুন দিয়ে, চোরাগোপ্তা হামলা করে দেশের রাষ্ট্রীয় কাজ থামানো যাবে না। এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়; এটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তারা ভেবেছে বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে সম্পত্তি ধ্বংস করে বোধহয় নির্বাচন বানচাল করা যাবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিচার করা হবে। তার কি রাজনৈতিক সিল আছে সেটা দেখা হবে না। যারা আগুন দেয় তারা সন্ত্রাসী। এদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবেই বিবেচিত করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্রের রাজনীতি করে না। এই দল সৃষ্টি হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নিয়ে। তারা মানুষকে ভালোবাসে না, সংবিধানের প্রতি আনুগত্য নেই। এই স্বাধীনতা তারা চায়নি। যার কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে তা তারা বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, গত ২৩ দিনে অবরোধের নামে ১৮৬টি গাড়ি পুড়ানো হয়েছে। কারা এই গাড়ি পুড়িয়েছে? যারা নির্বাচনে আসতে চায় না। পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। দেশকে অশান্ত করতে চায়। তাদের অবৈধভাবে জন্ম হয়েছে আর এজন্য তারা অবৈধভাবেই ক্ষমতায় আসতে চায়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বাসে আগুন দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হতে পারে না, এগুলো সন্ত্রাসী কর্মসূচি।
স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম নেতা ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ, গৌরব ’৭১ সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন প্রমুখ।
সভার শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধে দেয়া আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত দশজন বাস মালিক ও শ্রমিক নিজেদের অবস্থার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বোরাক পরিবহনের চালক মিরাজ হোসেন বলেন, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। গাড়ি পুরে কঙ্কাল হয়ে গেছে। শিকড় পরিবহনের মালিক লিটন মিয়া বলেন, যাত্রীবেশে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। গাড়ির সবকিছুই পুড়ে গেছে। আমার ইনকাম সোর্স বন্ধ হয়ে গেছে। অছিম পরিবহনের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, ২৯ তারিখ রাত তিনটায় খবর পাই গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমার দুইটা স্টাফ গাড়ির ভেতর ছিল। দুই মিনিটে গাড়িটা পুড়ে গেছে। একজন মরে কয়লা হয়ে গেছে। আরেকজনের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের পরিবারের অবস্থাও খারাপ। আর্থিক সহায়তা পাওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখনো পায়নি। সমকাল