বাড়িতে বিয়ের ধুমধাম আয়োজন। বর পক্ষের লোকজন আসার পর চলছে ভূরিভোজন। এই উৎসবমুখর আয়োজনে হঠাৎ উপস্থিত হলেন বিনা আমন্ত্রণের অতিথি!
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেহানা আক্তার খাতুন বাল্যবিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেন। কথা বলেন বর-কনে ও তাদের পরিবারের সাথে। শুরু হয় হৈ হুল্লোড়। কনে পক্ষের লোকজন চড়াও হন তাদের উপর। কিছুক্ষণের মধ্যেই মোবাইল কোর্ট নিয়ে পুলিশসহ সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট আফরোজা আফসানা। তাদের দেখেই পালিয়ে যায় বর যাত্রী ও অতিথিরা।
জানা যায়, পৌর শহরের বালুয়াপাড়া মহল্লার সুলতান মিয়ার মেয়ে মোছা: সুলতানা পারভিন (১৫) এবার গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তারই বিয়ের আয়োজন করা হয়। বর নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার মৃত আব্দুল মালেক তালুকদারের ছেলে আরিফুল ইসলাম রাফি।
বিষয়টি গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফৌজিয়া নাজনীনকে জানালে তিনি মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠান। এসময় বিয়ে বাড়ির লোকজন তাদের উপর চড়াও হলে মোবাইল কোর্ট নিয়ে সেখানে এসিল্যান্ড উপস্থিত হন। তাদের দেখে উভয় পক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর বিকালে মামলার হুমকি দিলে বেরিয়ে আসেন বর ও কনে।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জানান- বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে বললে কনে পক্ষের লোকজন আমাদের সাথে মারমুখী আচরণ করেন। এক পর্যায়ে তারা প্রাপ্তবয়স্ক অন্যএক মেয়ের আইডি কার্ড দেখিয়ে জালিয়াতির চেষ্টা করেন।
কনের বাবা সুলতান মিয়া বলেন- আমার মেয়ে গতবছর এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছে, এবার আবারও পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। তার প্রকৃত বয়স আঠারোর কাছাকাছি।
এসিল্যান্ড আফরোজা আফসানা জানান- বাল্যবিয়ের আয়োজনের জন্য তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিয়ে করবেন না মর্মে বর-কনে ও তাদের পরিবার মুচলেকা দিয়েছেন।