বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন স্বচ্ছ, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করায় কোনো সরকারি সংস্থা হয়রানির জন্য মামলা করবে না।
গণফোরামের সংসদ সদস্য (সিলেট-২) মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
১১ দফা সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে কোনো সরকারি সংস্থার দ্বারা হয়রানির জন্য মামলা দায়ের না করা; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, সমর্থক, তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সমর্থকদের হামলা প্রতিরোধ করা এবং এ ধরনের হামলা হলে আইন অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং নির্বাচনের আগে বৈধ অস্ত্র জমা নিশ্চিত করা।
অন্যান্য সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা যাতে সব রাজনৈতিক দল অবাধে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে পারে; বিশিষ্ট নাগরিক ও রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে মতবিনিময় বৈঠকে সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা; যোগ্য ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ; এবং দেশী-বিদেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগসহ আইনানুগ প্রয়োজনীয় সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, বাকি সিদ্ধান্তগুলো হলো নির্বাচনের সাথে জড়িত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদফতর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের সাথে বৈঠক করে এবং তারা যাতে নিষ্ঠার সাথে ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া। নির্বাচন; ভোটকেন্দ্র এবং নির্বাচনী এলাকায় অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মোতায়েন করা; নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে কার্যকর করার জন্য নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ; এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হচ্ছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, যেহেতু আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাই এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে।
তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন দৃঢ়ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ রাখতে নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সবার জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ, পর্যাপ্ত সংখ্যক দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি সংবাদ তথ্য অবাধে নিতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকে সুযোগ-সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের ফলাফল যেন সব ভোটার এবং অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সকল প্রার্থীর সাথে সমান আচরণ করবে, নির্বাচন কমিশনের আরো যোগ্য কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেবে, নিরপেক্ষ প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করবে যারা পক্ষপাতমূলক নির্বাচন থেকে মুক্তি দেবে এবং কর্মকর্তারা নির্বাচনী আইন ও বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। সূত্র : ইউএনবি