1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

দুদকের নতুন ‘ফাঁদ’

নাগরিক খবর অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩
  • ২০৩ বার পঠিত

ফাঁদ হচ্ছে হাতেনাতে দুর্নীতিবাজ ধরার একটি পদ্ধতি। দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) বিভিন্ন সময় ‘ফাঁদ’ পেতে থাকে। তবে ‘ফাঁদ’ পেতে দুর্নীতিবাজ ধরতে গিয়ে বিভিন্ন সময় নাজেহাল হতে হয়েছে দুদক সদস্যদের।

দুদক এই কার্যক্রম শুরু করেছিল ২০০৭ সালে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। ‘ফাঁদ’ পদ্ধতিটি ওই বছরই দুদকের ১৬ নম্বর বিধিতে সংযুক্ত করা হয়েছিল। সময়ের পরিক্রমায় ফাঁদ কার্যক্রম চালাতে এবার কিছু নতুন গাইড লাইন তৈরি করেছে দুদক। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বা হয়রানির শিকার হওয়া ব্যক্তিকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে সম্মত থাকতে হবে। অবশ্যই তাকে নাম প্রকাশে ইচ্ছুক ব্যক্তি হতে হবে।

দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ‘ফাঁদ’ কার্যক্রম বা ট্র্যাপ পরিচালনাকারী কর্মকর্তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনের বিধিমালা ২০০৭-এর বিধি-১৬ ও বর্তমান গাইডলাইনে বর্ণিত নির্দেশনা আবশ্যিকভাবে পালন করতে হবে। নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী, তিনটি ধাপে ফাঁদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে— ‘ফাঁদ পূর্ব, ফাঁদ পরিচালনা ও ফাঁদ পরবর্তী, এই তিন ধাপে বিভাজন করে কাজ করতে হবে। প্রতিটি ধাপের করণীয় যথাযথভাবে পালন করতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

পরিচালনাকারীদেরকে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে সম্পূর্ণ পেশাদারী আচরণ করতে বলা হয়েছে গাইড লাইনে। এ কাজে কমিশন বা প্রধান কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে হবে। এর আগে কমিশন থেকে অনুমোদন নিয়ে ফাঁদ পরিচালনাকারী দল ও তল্লাশি দল গঠন করতে হবে। ফাঁদ কার্যক্রম চালানোর সময় নিরপেক্ষ সাক্ষী আগেই ঠিক করে নিতে হবে। সাক্ষীর ক্ষেত্রে পাবলিক সার্ভেন্টকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অভিযোগ গ্রহণ, জব্দ তালিকা তৈরি ও সেগুলো জিম্মায় দেওয়া এবং এজাহার দায়েরসহ সব আইনগত পদক্ষেপ যথাযথভাবে শেষ করতে হবে। এছাড়াও ফাঁদ কার্যক্রম সংক্রান্ত চেক লিস্ট প্রতিপালন ও আসামিকে দ্রুত আদালতে পাঠাতে হবে।

‘কোনও সরকারি চাকরিজীবীকে (পাবলিক সার্ভেন্ট) ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে ও সজ্ঞানে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফাঁদ কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করা যাবে না। যিনি মিথ্যা তথ্য দেবেন, তাকেসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে দুদক। কমিশনের অনুমোদনে প্রধান কার্যালয় বা বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত টিম দেশের যেকোনও স্থানে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ফাঁদ পরিচালনা করতে পারবে।

এতে বলা হয়, ‘ফাঁদ পরিচালনার সময় অভিযোগকারী ও ফাঁদ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সম্ভব হলে শরীরে স্পাই ক্যামেরা বা অন্য কোনও ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সংযোজন করতে হবে। ফাঁদ কার্যক্রম শেষে জব্দ তালিকা তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে পুলিশ, র‍্যাব বা অন্য কোনও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা ও তাদের যথাস্থানে মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে কোনও সিসি টিভি ক্যামেরা থাকলে, তার ফুটেজসহ অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করতে হবে।’

দুদক সূত্র জানায়, নতুন নিয়মানুযায়ী, উদ্ধারকৃত আলামত যথা- টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী যথাযথভাবে নিজস্ব দফতর, আদালতের মালখানা কিংবা আদালতের আদেশ সাপেক্ষে যথাযথ স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। ফাঁদ কার্যক্রম শেষে মামলা দায়েরসহ এ সম্পর্কিত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস্ ও কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।’

দুদকের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর মাত্র চারটি ফাঁদ-মামলার তদন্ত করা হয়। তবে চলতি বছর এ প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হবে বলে জানান, ‘দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘ঘুষ লেনদেনের অবসান এবং দুর্নীতির উৎস নির্মূল করতে দুদক ফাঁদ কার্যক্রম পরিচালনা করে। সাধারণত সরকারি সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা- কর্মচারী সেবার বিনিময়ে ঘুষ দাবি করলে কমিশন থেকে অনুমোদনের ভিত্তিতে ফাঁদ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন তারা ঘুষ দাবি করা কর্মকর্তাকে হাতেনাতে ধরতে অভিযান চালায়। এবার অভিযান আরও জোরদার করা হবে। সেজন্য দুদকের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।’

দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সই করা গত ৮ মে’র আদেশে বলা হয়, ফাঁদ-মামলা জোরদারে নতুন করে গাইড লাইন তৈরি করেছে দুদক। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দুদকের অভিযোগ কেন্দ্র-১০৬ এবং অন্যান উৎস থেকে অভিযোগ আসে ৫০৪টি। এরমধ্যে ১৪৪টি অভিযোগ আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর অভিযোগ চালানো হয় ১৯৯টি অভিযোগের। কমিশনের অনুমোদনে অনুসন্ধান করা হয় ১৩টি অভিযোগ।

সূত্র বলছে, বিগত পাঁচ বছরে দুদক ফাঁদ কার্যক্রম পরিচালনা করে মাত্র ৫৯টি। ২০২২ সালে এমন অভিযান হয়েছিল মাত্র চারটি। ২০২১ সালে ছয়টি। ২০২০ সালে ১৮টি, ২০১৯ সালে ১৬টি এবং ২০১৮ সালে ১৫টি ফাঁদ কার্যক্রম পরিচালনা করে দুদক। তবে দুদক এবার এমন অভিযান আবারও বাড়াতে চায়। বি‌ট্রি

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com