কুমিল্লার দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হককে গলা কেটে হত্যার দুই আসামিকে খাগড়াছড়ির পানছড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত হচ্ছে কুমিল্লার কোতয়ালী থানাধীন আলেখারচর এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে আবু সাইদ (২৩) ও একই এলাকার আমিরুল ইসলামের ছেলে আমান উল্লাহ (৩৩)।
শনিবার (২০ মে) সকাল ১০টার দিকে পানছড়ি থানা পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় কুমিল্লা থেকে আসা ডিবি পুলিশের একটি দল পানছড়ি উপজেলার ভারত সীমান্তের লোগাং আমতলী এলাকা তাদের আটক করে।
জানা গেছে, শুক্রবার(১৯) দুপুরে জুমার নামাজ শেষে বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন আওয়ামী লীগ নেতা এনামুলকে টেনেহিঁচড়ে মসজিদের সামনেই মাটিতে ফেলে গলায় ছুরি চালায়। গুরতর অবস্থায় তাকে প্রথমে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা ৩টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এনামুল মারা যান।
সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর দুই ঘাতক পানছড়ি উপজেলার ভারত সীমান্তে লোগাং আসে। এরই মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পানছড়ি পৌঁছে কুমিল্লা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল। পানছড়ি থানা পুলিশের চৌকশতায় প্রথমে খবর পায় লোগাং এলাকায় দুজন অপরিচিত লোক আমতলী অবস্থান করছে। ডিবি পুলিশের কাছে থাকা ছবি নিয়ে পানছড়ি থানা পুলিশ নিশ্চিত হয় এই দু’জনেই হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। দ্রুত ডিবি পুলিশ ও পানছড়ি থানা পুলিশ মিলে লোগাং আমতলী থেকে দু’জনকে আটক করে।
আটক দুই হত্যাকারীকে সকাল ১১ টায় কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওনা হয় ডিবি পুলিশ। কুমিল্লা থেকে আগত ডিবি পুলিশের এসআই আমিরুল তদন্তের স্বার্থে কিছু বলতে রাজী হননি।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ নিয়াজ পাবেল জানান, এনামুলের সঙ্গে জামায়াত নেতা কাজী জহির গংয়ের রাজনৈতিক বিরোধের পাশাপাশি এনামুলের প্রতিষ্ঠিত আলেখাচর দক্ষিণপাড়া জমিরিয়া তালিমুল হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার দখল নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ মাদ্রাসার সেক্রেটারি ছিলেন এনামুল। কাজী জহির গং দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসাটি দখলের চেষ্টা করছিল। বৃহস্পতিবার(১৮ মে) কাজী জহিরের মাদক সেবন ও জুয়া খেলার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এজন্য এনামুলকে দায়ী করে তারা। কাজী জহির ও তার সহযোগীরা এনামুলের ওপর ক্ষুব্ধ হয়। জুমা পড়ে বের হলে কাজী জহিরের উপস্থিতিতে তার ভাই আমানুলসহ জামায়াত-শিবির কর্মীরা এনামুলকে গলা কেটে হত্যা করে।