কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল সেতু সংলগ্ন বাঁকখালী নদী দখলের অভিযোগে এন আলম ফিলিং স্টেশনের মালিক ভয়ংকর প্রতারক,জালিয়াতি চক্রের হোতা এইচএম নুরুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁর একাউন্টের আর্থিক লেনদেনের তথ্য চেয়ে উত্তরা ব্যাংক কক্সবাজার শাখায় চিঠি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও আগামি ২১ সেপ্টেম্বর এইচএম নুরুল আলমকে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এ তলব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, দুদকে তলব সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করায় দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের জেলা প্রতিনিধি, দ্যা ডেইলি ট্রাইব্যুনাল ও অনলাইন দৈনিক নিউজ কক্সবাজার ডটকম এর সন্পাদক এবং কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন সদস্য শাহজাহান চৌধুরী শাহীনকে কক্সবাজার শহর থেকে তুলে নিযে হত্যা হুমকি দেয়ায় এই এন আলম সহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি ( জিডি নং-৮৯৯,তাং-১৭/৯/২০২০ইং)দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত জিডিটি তদন্তের জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ উল্লাহকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে ভারপ্রাপ্ত ওসি মাসুম খান। এর আগে বুধবার রাতে মোবাইল ফোনে সাংবাদিক শাহজাহান চৌধুরী শাহীনকে হুমকি দেয়া হয়। এঘটনায় কক্সবাজারের সাংবাদিকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
দুদক সূত্র জানান, বাঁকখালী নদীর প্রায় ৫০০ একর জমি দখল করেছেন ১৫৭ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তারই অংশ হিসেবে বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল সেতু সংলগ্ন প্রায় ২ একর জায়গা দখল করার অভিযোগে এইচএম এন আলমের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
সুত্র মতে, গত মঙ্গলবার প্রাথমিকভাবে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারি পরিচালক মো. শরিফ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে তাকে দুদক সমন্বিত জেলা কাযালয় চট্টগ্রাম-২ এ তলব করা হয়েছে।
নোটিশে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি চাওয়ার পাশাপশি এইচএম এন আলমকে আগামি ২১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় নদীর তীরের সত্ত্ব সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র এবং এ বিষয়ে কোন মামলা কিংবা রায় হয়ে থাকলে তার রেকর্ডপত্র নিয়ে হাজির হতে অনুরোধ করা হয়।
নির্ধারিত সময়ে তিনি হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে ‘অভিযোগ সংক্রান্ত তার কোন বক্তব্য নেই’ বলে গণ্য করা হবে।
এদিকে এক চিঠিতে উত্তরা ব্যাংক কক্সবাজার শাখার কাছে এইচএম এন আলমের আর্থিক লেনদেন ও ঋণ দিয়ে থাকলে তার সত্যায়িত কপি চেয়েছে দুদক।
চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কা চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারি পরিচালক মো. শরিফ উদ্দিন।
এদিকে, কেরোসিন বিক্রির করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়া এই এন আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। গত কয়েক বছরের ব্যাবধানে কোটি কোটি টাকার মালিক ও সহায় সম্পত্তির মালিক হওয়া নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ছাড়াও জেলাবাসি হতবাক।
আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সহ তার আয়ের উৎস তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
বিভিন্ন সুত্রে প্রাপ্ত অভিযোগেে জানা গেছে, এই এন আলমের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগেে মামলা রয়েছে। ভুয়া খতিয়ানেে জমির আমমোক্তারনামা গ্রহণ, সরকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কালো টাকা নিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার, জমি ও হোটেল দখল, ইয়াবায় পৃষ্ঠপোষকতাসহ নানান অভিায়োগ আছে তার বিরুদ্ধে। প্রতারক এইচএম নুরুল আলম প্রকাশ এন আলম। তার মালিকানাধীন চকরিয়া ফাসিয়াখালী এনপি ফিলিং স্টেশন, রামু তেচ্ছিপুল এন আলম ফিলিং ও কক্সবাজার কলাতলি (পুলিশ লাইনস এর বিপরীতে) কক্সবাজার এলপিজি স্টেশন। তৈল পরিমাপে কারচুপি, ডিজিটাল মিটার নিয়ে প্রতারণা, তেলের সাথে পানি মেশানো দীর্ঘ দিনের অভিযোগ গ্রাহকদের।
এই তিনটি পেট্রোল পাম্প ও গ্যাস পাম্পে চরম ভাবে সাধারণ গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করার বিষয়টি একটি সংস্থা তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে।