জাকির নায়েক বলেন, কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন আমার সফলতার মূলমন্ত্র কী? আমি বলব- ‘স্বল্প চাহিদা’ ।
বর্তমান সময়ে আমার ও আমার পরিবারে খরচ মেটাতে মাসে ৪০,০০০ টাকা (২০০০ রিংগিট) লাগে । দাওয়াতের কাজে যে টাকা লাগে সেটার হিসেব আলাদা । কিন্তু, পরিবারের পেছনে মাত্র ৪০,০০০ টাকা, আলহামদুলিল্লাহ। এই টাকা দিয়েই আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন কর পারি ।
মালয়েশিয়ায় আসার পর আমার অনেককিছুই বদলে যায়। আল্লাহর প্রতি আমার ইমান বেড়ে যায়, আলহামদুলিল্লাহ্ । আমি আমার স্ত্রীকে বলি, “আমি যে সম্পত্তি হারিয়েছি, সেটার জন্য চিন্তা করো না। ধরে নাও আমরা শূন্য থেকে শুরু করব । আল্লাহ যদি আমাদেরকে কিছু ফিরিয়ে দেন, সেটা হবে বোনাস ।”
আমার এখন মাত্র ৪০ হাজার টাকায় সংসার চলে ।
পৃথিবীর অনেক সম্পদশালী ব্যবসায়ী আমাকে বলেন, “জাকির নায়েক, আপনার কী লাগে আপনার মাসে কত টাকা লাগে? আমরা ব্যবস্থা করব।”
আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলি, “আমার কিছুই লাগবে না।”
আমি যা উপার্জন করি, তার বেশিরভাগই দান করি । কত উপার্জন করি সেটা বলব না ।
আমি এখনও কোনো আলোচনা করলে সেটার ব্যয় আমি বহন করি । বিমানের টিকিট, হোটেল ভাড়া সব আমার টাকায় করার চেষ্টা করি ।
মালয়েশিয়ায় আসার আগে আমি তেমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতাম না। মালয়েশিয়ায় আসার পর আমার স্ত্রী ও ডক্টর ইয়াসির কাদির পরামর্শে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হই ।
আমার ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার ছিল চার লক্ষের মতো। এখন সেটা ত্রিশ লক্ষ, আলহামদুলিল্লাহ ।
আমার ফেসবুক ফলোয়ার্স ছিল এক কোটি চল্লিশ লক্ষ, এখন সেটা প্রায় দুই কোটি সাতাশ লক্ষ ।
আগে আমি সাপ্তাহিক প্রোগ্রাম করতে পারতাম না। এখন আলহামদুলিল্লাহ্, আমি সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তর পর্ব করতে পারি ।
বর্তমানে আমি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে দেখা করতে পারি। আমি যখনই তাদের সাথে দেখা করার সুযোগ পাই, সেই সুযোগকে আমি কাজে লাগাতে চাই। আমি চাই কুরআন-সুন্নাহর আলোকে তাদেরকে দাওয়াত দিতে ।
ভারতে থাকাবস্থায় আমি দৈনিক তিন ঘণ্টা ঘুমাতাম। মালয়েশিয়ায় আসার পর আমি দৈনিক গড়ে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ঘুমাই। ভারতে থাকাবস্থায় নামাজকেন্দ্রিক ইবাদাতে আমি কম সময় দিতে পারতাম । কর্মব্যস্ততা অনেক বেশি থাকত। এখন আলহামদুলিল্লাহ, তাহাজ্জুদ নামাজে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারি ।
মুম্বাইয়ে থাকাবস্থায় আমি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দাওয়াতি সংগঠন পরিচালনা করতাম । আমাদের অফিসে পাঁচশোজনের বেশি লোক কর্মরত ছিল । চেন্নাই, লন্ডনে আমাদের অফিস ছিল ।
এখন ‘জুম’ অ্যাপের মাধ্যমেই সবকিছু করতে পারছি। এখন আমার মাত্র পাঁচজন সহকর্মী আছেন ।
সবকিছুই আল্লাহর সাহায্যের কারণে সম্ভব হয়েছে । আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমি কিছুই নই । আমি জীবনের কোনো কিছু নিয়ে আফসোস করিনি। আমি জানতাম, আমি যতই চেষ্টা করি না কেন, আমার ভাগ্যে যা আছে, আমি তাই পাব ।
আমার কাজ শুধু চেষ্টা করে যাওয়া, আফসোস করা নয় ।