মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজার বদ্ধভূমিতে ঘুরতে গিয়ে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন দুই জাপানি নাগরিক। এ ঘটনায় জড়িত তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক। তিনি বলেন, গত ২৪ এপ্রিল দুই জাপানি নাগরিক শেরেবাংলা নগর থানার নন্দিনী হোটেলে ওঠেন।
পরে রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন কবরস্থানে ঘুরতে যান। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে জাপানি নাগরিকরা কবরস্থান থেকে বের হতে চাইলে অজ্ঞাত তিন যুবক দেশীয় অস্ত্র ধরে তাদের কাছ থেকে এক লাখ ৫৩ হাজার ৮শ জাপানি মুদ্রা, ২৮ হাজার বাংলাদেশি টাকা, দুটি আইফোন, দুটি ক্রেডিট কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলথ কার্ড, একটি পোর্টেবল হটস্পট ও একটি ব্লুটুথ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে হোটেলে চলে যান দুই জাপানি নাগরিক। পরদিন বিষয়টি হোটেল ম্যানেজারকে জানালে হোটেল কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করে।
এইচ এম আজিমুল হক বলেন, পরে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) হোটেল ম্যানেজার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা (মামলা নং-১০৮) করেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্ত শুরু করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। তদন্তকালে আশপাশের এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত চক্রটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই। পরে মোহাম্মদপুর থানার বোর্ডঘাট এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. খাইরুল ইসলাম স্বপন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে রায়েরবাজার শুঁটকি আড়তের পেছনে কবরস্থানের দেয়াল সংলগ্ন মাঠ থেকে ছিনতাই হওয়া জাপানি নাগরিকের পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলথ কার্ড, দুটি ক্রেডিট কার্ড ও পাসপোর্ট ছেড়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, অন্য দুই আসামি জিহাদুল ইসলাম মামুন (১৯) ও মো. আবু রাসেল প্রত্যয় (২২) ছিনতাই করা টাকা দিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে যায়। আমরা বিষয়টি জানতে পেরে অপর একটি টিমকে কক্সবাজারের উদ্দেশে পাঠাই। পরে কক্সবাজার থেকে জিহাদুল ইসলাম মামুন ও আবু রাসেল প্রত্যয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া একটি আইফোন, ৩০ হাজার জাপানি মুদ্রা, একটি পোর্টেবল হটস্পট ও একটি ব্লুটুথ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, দুটি আইফোনের মধ্যে একটি উদ্ধার করা গেলেও আরেকটি এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি, আমরা সেটি উদ্ধারের চেষ্টা করছি। ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮শ জাপানি মুদ্রার মধ্যে ৩০ হাজার মুদ্রা উদ্ধার হয়েছে। বাকি জাপানি মুদ্রা তারা কনভার্ট করে খরচ করে ফেলেছে। গ্রেপ্তার তিন জনের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল, মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আজিজুল হক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার সরকার, মোহাম্মদ নাজমুল ও মো. মাজেদুল।