কুমিল্লা সদর উপজেলার আমড়াতলী বড়জ্বালা গ্রামের জহির নামের এক যুবককে প্রতিবেশীর ঘর থেকে ধরে নিয়ে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে এলাকাবাসী। অভিযুক্ত ব্যক্তি ৬০ ব্যাটালিয়নের বড়জ্বালা বিওপির বিজিবি সদস্য নায়েক সোহাগ।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, বড়জ্বালা এলাকার জহির তার সহপাঠিদের নিয়ে মতিনগরের তোফায়েল মিয়ার ঘরে নাস্তা খাওয়াকালীন বড়জ্বালা বিওপির বিজিবি সদস্য নায়েক সোহাগ ঘর থেকে টেনে হেচড়ে বের করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। জহিরকে আটক করার আধা ঘন্টা পুর্বে ভারতীয় সীমান্তের তারকাটা বেড়া সংলগ্ন উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যবের মালিক জহিরকে বানায় নায়েক সোহাগ । এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত জনতা ক্যাম্পের সামনে অবস্থান করে। এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা বড়জ্বালা বিওপির বিজিবি সদস্যদের সাথে কথা বলতে চাইলে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।
জহিরকে আটক করার সময় তার সাথে থাকা মতিনগরের আলমগীর নামের একব্যক্তি জানায়,আমি জহির তার দুজন সহপাঠিসহ তোফায়েল মিয়ার ঘরে বসে বুটমুড়ি খাচ্ছি । হঠ্যাৎ ঘরের সামনে হাজির হয় বিজিবি সদস্য নায়েক সোহাগ। নায়েক সোহাগ তার সাথে থাকা বিজিবির আরও তিন সদস্যদেরকে সাথে নিয়ে প্রবেশ করে আলমগীর নাম বলে ডাক দেয়। এ সময় জহিরকে দেখা মাত্র ঘর থেকে জোরপুর্বক টেনে বের করে নিয়ে আসে। একপর্যায়ে ঘটনার আধা ঘন্টা আগে সীমান্তে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধারকৃত মাদকের মালিক জহিরকে দেখিয়ে তার সাথে থাকা আলমগীরসহ আরও এক যুবককে বড়জ্বালা বিজিবির ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
এ সময় পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধারকৃত মাদকের মালিক জহিরের নাম বলার জন্য ও মামলায় স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। আলমগীর স্বাক্ষী দিতে রাজী না হলে তাকে মাদক মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি দিতে থাকে নায়েক সোহাগ। এ সময় ক্যাম্পের সামনে স্থানীয় লোকজন জড়ো হতে দেখে আলমগীরকে ছেড়ে দেয় বিজিবির সদস্যরা।
অপরাধ ছাড়া জহিরকে আটক করার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ শতাধিক নারী পুরুষ বড়জ্বালা বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থান করে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। উক্ত ঘটনার সংবাদ পেয়ে স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা বিজিবি ক্যাম্পে উপস্থিত হলে বিজিবির সদস্যরা কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে। বার বার চেষ্টা করেও বিজিবির সদস্যদের সাথে কথা বলা যায়নি।
বিজিবি সদস্য নায়েক সোহাগের আতঙ্কে বড়জ্বালা ও মতিনগর এলাকার সাধারন মানুষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৃদ্ধ এক ব্যক্তি জানায়,
নায়েক সোহাগ বিভিন্ন অযুহাতে ঘর বাড়িতে প্রবেশ করে মানুষকে হয়রানি করে। বড়জ্বালা ক্যাম্পে থেকে গত এক বছরে অনেক ব্যক্তিকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে নায়েক সোহাগ।
নায়েক সোহাগের ভয়ে আতঙ্কিত এলাকার নারী পুরুষ সকলে। সীমান্তে বসবাসকারী কারও হাতে মোবাইল দেখলে জোরপুর্বক কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঘরবাড়িতে প্রবেশ করে নারীদের গায়ে হাত দেওয়ার মত ঘটনা রয়েছে নায়েক সোহাগের বিরুদ্ধে।
কিছু দিন পুর্বে মতিনগর এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে শাওনকে খালি হাতে ধরে মাদক দিয়ে মামলা দিয়েছে। একই গ্রামের সাদেক মিয়ার অসুস্থ ছেলে তোফায়েলকে রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে ধরে নিয়ে গাঁজা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয় নায়েক সোহাগ।
তোফায়েলের স্ত্রী জানায়, তার স্বামী পা ভাঙ্গা নিয়ে অসুস্থ ছিল। রাতে ঘরের সামনে এসে তার স্বামীকে ডাকতে থাকে, অসুস্থ জেনেও কথা বলার অজুহাতে তাকে ক্যাম্পে নিয়ে মাদক মামলা দিয়ে জেরে পাঠায় বিজিবির নাায়েক সোহাগ।
বিজিবি সদস্য নায়েক সোহাগের ক্ষমতা ও অপকর্ম নিয়ে বিস্তারিত খবর আসছে শীঘ্রই।