1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

পু‌লিশ জনগ‌ণের বন্ধু হ‌বে কিভা‌বে ! হাজারও ভাল কাজ‌ে পু‌লি‌শের সুনাম হয় না

‌ডেস্ক নিউজ:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৬১৪ বার পঠিত
সহকা‌রি পু‌লিশ প‌রিদর্শক শা‌হিন মিয়া

পুলিশ জনগণের বন্ধু হবে কিভাবে! এরা নিজেদের কাজের পরিধির বাইরে হাজারো কাজ করবে। যেটা তাদের দায়িত্ব নয় সেটাও গায়ে টেনে নিয়ে করবে। ফলাফল অনেক মানুষের স্বার্থ নষ্ট হচ্ছে অহরহ। আর যাদের স্বার্থে আঘাত হানবে তাঁরা নিশ্চয়ই পুলিশকে বন্ধু ভাববে না, এটাই স্বাভাবিক। মানুষ যা করে তা জীবিকার তাগিদে শুরু করে। পরে সেটা পেশা এবং একসময় নেশায় পরিনত হয়। আর নেশা কি জিনিস তা নেশাগ্রস্ত মানুষের ভুক্তভোগী পরিবার ভালো জানে। নেশা থেকে মানুষকে বের কত কঠিন তাও জানে তার পরিবার। একারণেই সকল ধর্মে নেশাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

পুলিশ মানুষের বন্ধু হতে পারেনা যে কারণে;
তারা অন্য পেশা ও নেশার মানুষের ক্ষতি করতে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে। আরে বাবা চেকপোস্ট করতে এসেছিস চেকপোস্ট করে চলে যা। তা না করে কে বাবা নিয়ে এসেছে তাঁকে ধরে। পুলিশের কাছে বাবার কোন দাম নেই 😉 অথচ কত কষ্ট করে সেই নাফ নদী পার হয়ে কত বাহিনী ও বিভাগের লোকজনকে ফাঁকি দিয়ে বা ম্যানেজ করে বাবা নিয়ে এসেছে। কেউ কিছু বললো না, পুলিশ ধরেই মামলা দিল। আরে বাবা এ বাবার জন্য সুনির্দিষ্ট বিভিন্ন বিভাগ আছে। এ বাবা তো এ দেশে তৈরি হয়নি। তো সীমান্ত দিয়ে আনার সময় সীমান্তরক্ষীরাও ধরতে পারেনি। আবার বাবা নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারাও দেখতে পায়নি। তুমি পুলিশ কেন বাবা ধরার জন্য ওৎ পেতে থাকো? দেশের বড় একটি অংশ বাবার সাথে জড়িত। আর পুলিশ এসব বাবা বহনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ায় তাঁরা এবং তাদের পরিবার নিশ্চয়ই পুলিশকে ভালো বলবে না।

গতকাল পাকিস্তান গাঁজা চাষ অনুমোদন দিয়েছে। ক্যানাডা আরো আগে গাঁজা চাষকে উৎসাহিত করে উপকারী ভেষজ হিসেবে ঘোষণা করেছে। আরো কয়েকটি দেশে গাঁজাকে বৈধতা দিয়েছে। অথচ বাংলাদেশ পুলিশ দুই পুরিয়া গাঁজা পেলেও মামলা দেয়। দেশের বৃহৎ একটি শ্রেণী গাঁজা সেবন ও বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত। মাঝে মাঝে এরা মেয়াদোত্তীর্ণ গাঁজাও সেবন করে 😉 আর পুলিশ গাঁজা কাছে পেলেই ধরে নিয়ে হাজতে দেয়। তারাও নিশ্চয়ই পুলিশকে বন্ধু ভাববে না।

দেশে বছরে প্রায় ৫/৬ লক্ষ ফৌজদারি মামলা হয়। আর তাতে আসামি হয় ২০/৩০ লক্ষাধিক মানুষ। যার ৯৫% মামলায় আসামিদের বিপক্ষে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এসব মামলার আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার করে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। তারা নিজেরা অন্যায় করছে সেটা কখনোই ভাবেনা। বরং তারা ভাবে পুলিশ তাদের জীবনটা তছনছ করে দিয়েছে। এত্তসব আসামি এবং তাদের পরিবারের লোকজন কখনোই পুলিশের ভালো দেখতে পাবে না। প্রতিবছর‌ই এ ধরনের লোকজনের সংখ্যা বাড়ছে।

সতের কোটির মানুষের দেশে বছরে অনুমান প্রায় এক কোটি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ (এক‌ই গাড়ির বিরুদ্ধে একাধিক মামলাসহ)। এসব গাড়ির চালক ও মালিক কখনো ভাবেনা তারা আইন অমান্য করেছে। বরং ভাবে পুলিশের কারণে তাদের এ হেনস্থা। তারাও কখনো পুলিশের গুনগান গাইবে না।

করোনার সময় পুলিশ কর্মহীন গরীব মানুষের মাঝে নিজেদের বেতন রেশন বিলিয়ে সাহায্য করেছে। কিন্তু যখন‌ই এ সাহায্য দেয়া বন্ধ করেছে তখন‌ই অনেক থানা ফাড়িতে এসব সাহায্য নেয়া লোকজন ঢিল ছুড়েছে। তারাও দিনশেষে পুলিশকে গালি দিতে একবারও ভাবেনি।

রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ! তারা অহেতুক গাড়ি আটকিয়ে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির জ্বালানি পোড়ায়। অথচ ট্রাফিক পুলিশ রোদে পুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে কিসের আশায়! পার্কে, রেস্তোরাঁয়, হোটেলে বান্ধবী বা বন্ধু অপেক্ষা করে বিরক্ত হচ্ছে। কিন্তু সিগন্যালের কারণে দ্রুত যেতে না পারা কপোত কপোতীরা কত যে গালি দেয় পুলিশকে তা কেবল তারাই ভালো বলতে পারবে। ইফতারীর সময় ইফতার না খেয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশকেও গালি দিতে দ্বিধাবোধ করে না গাড়িতে বসে থাকা ভদ্রলোকেরা।

ধর্মীয় উদ্দীপনায় জঙ্গি উৎপাদন হবে। কিন্তু সেখানেও বাঁধ সাধবে পুলিশ। তছনছ করে দিবে জঙ্গিদের আস্তানা। ধর্মীয় উস্কানীতে রাজপথ রঞ্জিত করবে, সেখানেও পুলিশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁধা দিবে। বিরোধীদল রাজপথে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সরকারের ভীত নড়িয়ে দিবে, সেখানেও পুলিশ বাঁধা দিবে। শ্রমিক বা ছাত্র আন্দোলনে বাঁধা দিবে পুলিশ। এসবের সাথে জড়িত দেশের বৃহৎ একটি অংশের মানুষ। তারাও নিশ্চয়ই পুলিশকে ভালো বলবে না।

কে হুন্ডির ব্যবসা করে? কে দূর্নীতি করে? কে অবৈধ অস্ত্র রাখে? কে জাল টাকার ব্যবসা করে? কে মাদক ব্যবসা করে? কে মানব পাচার করে? কে চোরাচালান করে? কে জুয়া খেলে? কে নারী নির্যাতন করে? কে চুরি করে? কে ডাকাতি করে? কে কার প্রেমিকের কোলে মাথা রাখে, এসব কেন দেখে পুলিশ?

কি দরকার এসব করার! পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। এটাই তাদের দায়িত্ব। কেউ মাদক নিয়ে মারামারি করলেও পুলিশ গিয়ে সম্মানের সাথে তাদের নিবৃত করবে। এক নারী নিয়ে দুই পুরুষ কাড়াকাড়ি করলেও পুলিশ গিয়ে তাদের সম্মানের সাথে বুঝিয়ে দিবে ‘এরকম নারী আরো আছে তোমার জন্য’। কেউ মাদক খেলে বা বিক্রি করলে তাদেরকে নিরাপত্তা দিবে। কেউ খুন খারাবি করলেও তাদেরকে সম্মান দিয়ে কথা বলবে পুলিশ। তবেই না পুলিশ বন্ধু হবে জনতার। দেশের আপামর মানুষ বলবে “আহ্ কত্ত ভালো বাংলাদেশ পুলিশ” 😉

যে দেশের মানুষ আইন অমান্য করাকে স্বার্থকতা মনে করে গর্ব করে, যে দেশের মানুষের মাঝে আইন না মানার অসুস্থ প্রতিযোগিতা হয়, সে দেশে আর যাই হোক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা পুলিশ কখনো জনগণের বন্ধু হতে পারেনি, পারবেও না। যতদিন দেশের মানুষ না তাদের অসুস্থ মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারবে।

ধানের‌ও চিটা থাকে, গোবরেও পদ্ম ফুল ফোটে

এসআই শাহীন মিয়ার ফেইস বুক থে‌কে নেওয়া

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com