বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে খুলনার কয়রা খুলনার কয়রা বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে উপজেলার কপোতাক্ষ, শাকবাড়িয়া, আড় পাঙ্গাশিয়া, শিবসাসহ অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার চার ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জোয়ারের পানির চাপে কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ অভার ফ্লো( উপচিয়ে) পানি লোকালয়ে প্রবেশ ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের দক্ষিণবেদকাশি গ্রামের বেঁড়িবাধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হযে পড়েছে সহস্রাধিক মানুষ। নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে আতঙ্কে রয়েছে গোটা কয়রা উপকূলের মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ষাটের দশকে নির্মিত বেঁড়িবাধ কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কোনো কোন জোরালো উদ্যোগ দেখা যায়নি । কখনো কখনো দায়সারা কাজ হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা মানুষের কষ্টের কথা কখনোই বিবেচনায় নেয়নি। এখন প্রবল জোয়ারে আবারো বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসি আরও বলেন, বর্তমান এমপি আক্তারুজ্জামান বাবু নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সংসদ অধিবেশনে তিনি জোরালো দাবি জানান উপকূলের মানুষের জন্য টেকসই বেঁড়িবাধের। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর বেঁড়িবাধে জো রালো ভাবে কাজ শুরু হয়যা এখনো দৃষ্টমান তিনি প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা একটি প্রকল্প পাস করান যা টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন আছে,এছাড়া জায়কার অর্থায়ানে ৩৫০ কোটি ব্যয়ে বেঁড়িবাধের কাজ চলমান আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে এ রিংবাঁধ আবারও ভেঙ্গে গেছে উল্লেখ করে দক্ষিণ বেদকাশী এলাকার স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি মো. আবু সাঈদ খান বলেন, দক্ষিণ বেদকাশীর চরামুখা এলাকায় ওয়াবদার ২০০ মিটার রিংবাঁধ শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরের জোয়ারে ভেঙে যায়। তিনি আরও বলেন, বাঁধ না ভাঙলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঘুম ভাঙে না। দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন মানুষের লোনাপানির হাত থেকে মুক্ত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
কয়রা সদরের প্যানেল চেয়ারম্যান এস এম লুৎফর রহমান বলেন, সুতির কোনা গেট ও তার আশ -পাশ এলাকা দুপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারে পানিতে বাঁধের বিভিন্নস্থান দিয়ে চুইয়ে ও ছোট-বড় ছিদ্র দিয়ে নদীর পানি এলাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। আজও অনেক জায়গায় পানি প্রবেশ করছে।‘স্থানীয় জনগণ বিভিন্ন জায়গায় মাটি দিয়ে পানি ঢোকার পথ বন্ধ করছে। কিন্তু আরো পানি বৃদ্ধি পেলে এই বাঁধ টিকিয়ে রাখা যাবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে,’ বলেন এই জনপ্রতিনিধি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মশিউল আবেদীন বলেন, পানি ঢোকার সংবাদ শুনে প্রথম থেকেই আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির সহায়তায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকালয়ে পানি যাচ্ছে ও বেঁড়িবাধ ১ টি জায়গায় ভেঙ্গে গেছে।পানি আটকাতে কাজ চলমান আছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি সাথে বৈরী আবহাওয়ার কারনে উপজেলা ঝুঁকি পূর্ণ ও নিচু বেঁড়িবাধের অনেক জায়গা অভার ফ্লো হয়েছে। দক্ষিণ বেদকাশিতে রিংবাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর রিংবাঁধ মেরামত করা হয়েছিল গতকাল তা আবার ভেঙ্গে যায় জন্য সেখানে বিভিন্ন টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছি। সেখানে স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। দরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থা গ্রহণ।