দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের প্রথম অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া নয়টা থেকে শুরু হয়েছে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত চলে এই অস্ত্রোপচার। তিনি বলেন, আমরা প্রথম অস্ত্রোপচার শেষ করলাম। তার জন্য গঠিত দুইটি মেডিক্যাল বোর্ডের সব সদস্যরা এখানে উপস্থিত ছিলেন। অস্ত্রোপচারের সফলতা কতটুকু জানতে চাইলে বদরুল আলম বলেন, সেটা আগামীকাল না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না, তবে অস্ত্রোপচারে কোনও সমস্যা হয়নি, উনি ভালো আছেন। এর আগে দুপুরে ওয়াহিদা খানমকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরপর তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ও হাসপাতালের নিউরো সার্জারির অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এ মুহূর্তে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। ইউএনও’র অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার রক্তচাপ ও পালস স্বাভাবিক না হলে অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হবে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, তার অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অপারেশনও করা যাবে না।ওয়াহিদা খানমকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে রংপুর থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
প্রসঙ্গত, বুধবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। গেটে দারোয়ানকে বেঁধে ফেলে তারা। পরে বাসার পেছনে গিয়ে মই দিয়ে উঠে ভেনটিলেটর দিয়ে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে হামলাকারীরা। ভেতরে ঢুকে ভারী ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও আঘাত করে ইউএনও ওয়াহিদাকে গুরুতর আহত করে। মেয়েকে বাঁচাতে এলে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে (৭০) জখম করে। পরে তারা অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেয়। তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুরে পাঠানো হয়। ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে রংপুর ডক্টরস ক্লিনিকে আইসিইউতে ও তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওয়াহিদা খানমকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়।