1. nagorikkhobor@gmail.com : admi2017 :
  2. shobozcomilla2011@gmail.com : Nagorik Khobor Khobor : Nagorik Khobor Khobor
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কু‌মিল্লায় ডি‌বির পৃথক অ‌ভিযা‌নে ইয়াবা ফে‌ন্সি‌ডিল আটক ৩ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত – এম সাখাওয়াত হোসেন দে‌শের প্রয়োজ‌নে বিএনসিসির সদস্যরা বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ কর‌বে – সেনাপ্রধান কু‌মিল্লায় সাংবা‌দিক‌দের সা‌থে পু‌লিশ সুপা‌রের মত‌বি‌নিময় নারায়নগন্জ মহানগর বিএনপির র‍্যালিতে কৃষক দলের অংশগ্রহন। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগ‌ঞ্জে বিএন‌পির র‍্যালি গোপালগ‌ঞ্জে দিনমুজুর‌কে হত্যা মামলায় গ্রেফতার, নবজাতক দুই বোন নিয়ে দিশেহারা ছোট ভাই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ কর‌তে হ‌বে, না করলে প্রশাসক নিয়োগ হ‌বে- সাখাওয়াত বাংলাদেশ থেকে জাপানি সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিবে আজারবাইজানে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

শীঘ্রই জোরা‌লো হ‌চ্ছে আওয়ামী লী‌গে শু‌দ্ধি অ‌ভিযান : দেশ জু‌ড়ে বিত‌র্কিত নেতা‌দের তা‌লিকা প্রণয়ন

‌ডেস্ক নিউজ:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩৭৪ বার পঠিত

সারা দেশে দুর্নীতি-অনিয়মসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের ৮ হাজার নেতার একটি তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এই তালিকা প্রস্তুত করেছেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সূত্র জানায়, বিতর্কিত এই ৮ হাজার নেতার মধ্যে ৫ হাজারই বিরোধী মতাদর্শী অনুপ্রবেশকারী। অনেকে আবার বড় নেতাদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। তবে যত প্রভাবশালী এবং সরকার কিংবা ক্ষমতাসীন দলের যত ঘনিষ্ঠই হন না কেন, এবার ছাড় পাবেন না কেউ। কারো ব্যক্তিগত অপরাধের দায় নিতে নারাজ সরকার ও দল। বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে এবার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি মাসেই দেশ জুড়ে জোরালোভাবে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একে একে সব বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ত্যাগীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করাই এর লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ইত্তেফাককে জানান, ‘সম্প্রতি কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একটি বার্তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে অপকর্মকারীরা দলের লেবাস ব্যবহার করে ছাড় পাবে না। তাদের শাস্তি পেতেই হবে। সাংগঠনিক শাস্তি গ্রহণের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর তিন জন নেতা জানান, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর চলমান দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান জোরালো করা হবে। বিতর্কিতদের দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। দলের তৃণমূল শাখা সম্মেলনে তাদের অংশগ্রহণও নিষিদ্ধ থাকবে। রেহাই পাবেন না বিতর্কিত এমপিরাও। ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়নে শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে পাবনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বিশ্বাস। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার মধ্য দিয়ে টানা ২৫ বছর পর এ আসনে সাবেক এমপি ডিলু পরিবারের একচ্ছত্র আধিপত্যের পতন হয়েছে।

করোনাকালে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আরো দুটি আলোচিত ঘটনা হচ্ছে করোনার সনদ জালিয়াতিসহ নানা প্রতারণায় জড়িত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম এবং জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে গ্রেফতার করা। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মহাপ্রতারক সাহেদ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পরিচয় দিয়ে সরকার ও দলের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের অপতত্পরতায় লিপ্ত ছিলেন। গতকাল রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজের ৫২টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দিয়েছে আদালত।

গতকাল বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সম্পাদকদের কঠোর নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, বিভাগীয় উপকমিটিগুলোতে আর বিতর্কিত বা অনুপ্রবেশকারীদের দেখতে চায় না আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে কোনো কারণে কোনো উপকমিটিতে সাহেদদের মতো কাউকে জায়গা দেওয়া হলে তার দায়দায়িত্ব কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যসচিবকেই নিতে হবে এবং দলের হাইকমান্ডের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে। বৈঠক সূত্র জানায়, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরে বৈঠকে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ সম্পাদকমণ্ডলীর বেশ কয়েকজন নেতা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের যেন কোনোভাবেই দলে জায়গা না দেওয়া হয় সে বিষয়ে আলোচনা করেন।

এদিকে সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুল মানব পাচারে অভিযুক্ত হয়ে কুয়েতে গ্রেফতারের ঘটনায়ও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। পাপুল ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামের অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সংসদে বলেছেন, ‘ঐ সংসদ সদস্য (পাপুল) কুয়েতের নাগরিক হলে তার আসনটি (লক্ষ্মীপুর-২) খালি করে দিতে হবে।’

সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তত্কালীন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়। একইভাবে নির্মাণ খাতের ‘গডফাদার’ জি কে শামীমসহ যুবলীগ, কৃষক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরো কয়েক জন নেতার ঠাঁই হয়েছে কারাগারে। পদ হারিয়েছেন তত্কালীন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, ছাত্রলীগের সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ অনেকেই। ব্যাংক হিসাব তলব ও বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ নানা আইনি পদক্ষেপের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। তদ্বির-বাণিজ্যে যুক্ত হয়ে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক বনে যাওয়া নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়াকেও জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অনেক বিতর্কিত এখনো আত্মগোপনে আছেন। গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও শেখ হাসিনার দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের প্রতিফলন দেখা গেছে।

জানা গেছে, গত সাড়ে ১১ বছরে ৫৫ হাজার বিরোধী মতাদর্শী আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোতে অনুপ্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে ৫ হাজার অধিকতর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। রাজাকার ও পাকবাহিনীর সহযোগিতায় গঠিত শান্তি কমিটির প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এমন ব্যক্তি ও তাদের সন্তান-স্বজনদের কেউ কেউ নানা কৌশলে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোতে ঢুকে পড়েছেন। এক সময় যারা ফ্রিডম পার্টি, বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ২০০৯ সালের পর তারা দলে দলে সরকারি দলে যোগদান করা শুরু করেন। এসব অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয়দাতার তালিকায় আছেন ৬৭ মন্ত্রী-এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতা।

সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় যেসব জেলা, মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে তাদের আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অনুপ্রবেশকারী কাউকে না রাখতে বলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর একজন সদস্য জানান, দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়ই দলের নেতাকর্মীদের অপকর্মে জড়িয়ে পড়াকে অপছন্দ করেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে হয়তো তার কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকে না। কিন্তু কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন এরই মধ্যে তিনি তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে দলে অনুপ্রবেশকারী ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। আশ্রয়দাতারা আর বিতর্কিতদের রক্ষা করতে পারবে না। সুত্র দৈ‌নিক ই‌ত্তেফাক।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 nagorikkhobor.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com