তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিদেশিদের কাছে দৌড়-ঝাঁপ না করে জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য বিএনপি’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সাংবাদিকরা আজ দুপুরে সচিবালয়ে মতবিনিময়কালে সম্প্রতি জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সাথে বিএনপি’র বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখি, বিএনপি সবসময় বিদেশিদের কাছে ছুটে যায়। বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে, বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার কাছে তাদের দৌড়-ঝাঁপ। কিন্তু এদেশের মালিক হচ্ছে দেশের জনগণ, তারাই ক্ষমতার মালিক, তারাই প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। এদেশে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রদূত কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি কাউকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসানোর অধিকার রাখে না।
ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের নাক গলানোও সমীচীন নয়। কিন্তু তারা নাক গলাতে না চাইলেও আমরা দেখি বিএনপি তাদের নাকটা নিয়ে ওদের কাছে যায়। এটি দেশকে ছোট করার সামিল। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো বিদেশিদের কাছে দৌড়-ঝাঁপ না করে জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য। সেটি বরং বিএনপির জন্য মঙ্গলজনক হবে।
তথ্যমন্ত্রী এসময় সবাইকে পবিত্র ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর আট লাখের বেশি গবাদি পশু কুরবানি হয়েছে। বেশি কুরবানির পশু জবাই হওয়া প্রমাণ করে যে মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে। একইসাথে এ বছর বাংলাদেশের গবাদি পশু দিয়ে কুরবানি হয়েছে এবং অনেক গবাদি পশু ফেরত গেছে। অর্থাৎ আমাদের প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে পারছি। সরকারের নানামুখি নীতির কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ পুস্তিকার মোড়ক উন্মোচন করেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) মহাপরিচালক স.ম. গোলাম কিবরিয়া, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মুহা. সাইফুল্লাহ, ডিএফপি’র পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রমুখ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
পুস্তিকাটি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সরকার শুধুমাত্র স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে তা নয়, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে দেশকে গড়ে তুলতে চান। সেজন্য সরকার ২০৩০ সাল, ২০৪১ সাল নাগাদ পরিকল্পনাসহ ২১০০ সাল নাগাদ বদ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশে লোকসংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ১৯ কোটির মতো। তবে ২১০০ সাল নাগাদ দেশে লোকসংখ্যা কমে ১৫ কোটির কাছাকাছিতে দাঁড়াবে -এমনটিই বলছে পরিসংখ্যান। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত আমাদের নিত্যসঙ্গী। সেই বাস্তবতার নিরিখে যদি এখন থেকে পরিকল্পনা না থাকে তাহলে দেশকে সমৃদ্ধিশালী করলেও সেটি টেকসই করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সেই কারণেই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। পুস্তিকাটিকে ইংরেজিতে প্রকাশের জন্য তিনি ডিএফপিকে অনুরোধ জানান।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো: মকবুল হোসেন পুস্তিকাটি প্রকাশের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে টেকসইভাবে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য দূরদর্শিতার পরিচায়ক। পুস্তিকাটি এই বৃহৎ পরিকল্পনাকে মানুষের সামনে সহজভাবে উপস্থাপন করতে অত্যন্ত সহায়ক হবে।বাসস