বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ধীরে-ধীরে উন্নতি হলেও দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি এড়াতে তাকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসাকে একটি মিনি হাসপাতালের মতো বানানো হয়েছে। কারণ তার শারীরিক যে অবস্থা, তাকে নিয়মিত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। না হলে তার প্রকৃত শারীরিক অবস্থা জানা যায় না।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা বলছেন, পুরোপুরি সুস্থ না হলেও করোনা ঝুঁকির কারণে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। তার বাসায় এখন প্রতিদিন নিয়ম করে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসেন। তাছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী ওষুধ পরিবর্তন করা হচ্ছে নিয়মিত। চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্সরাও নিয়মিত দুই শিফটে তারা বাসায় ডিউটি করেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডাম বাসায় আছেন। উনাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসক ও নার্সরা উনার বাসায় দেখতে যাচ্ছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে, প্রয়োজন হলে ওষুধ পরিবর্তন করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খালেদা জিয়ার একজন চিকিৎসক বলেন, আগের চাইতে ম্যাডামের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো। খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে। কিন্তু উনার যে শারীরিক কন্ডিশন, সেটা যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো দিকে যেতে পারে। সেই কারণে সর্তকতা অবলম্বের অংশ হিসেবে চিকিৎসকরা সবসময় তাকে পর্যবেক্ষণে রাখছেন। যাতে কোনো ঝুঁকি দেখা দিলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে শিফট করা যায়।
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ম্যাডামের গুলশানের বাসা ফিরোজাকে একটা মিনি হাসপাতালের মতো বানানো হয়েছে। যাতে সহজে ছোট-মাঝারি ধরনের যে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায়।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুন (শুক্রবার) গভীর রাতে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। পরে এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি রিং পরানো হয়। যদিও তার হৃৎপিণ্ডে আরও দুটি ব্লক ধরা পড়ার কথাও জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে ১৪ দিন চিকিৎসা শেষে ২৪ জুন বাসায় ফিরেন খালেদা জিয়া।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুই বছরের বেশি সময় কারাভোগের পর করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান। এরপর চার দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।