নারায়ণগঞ্জের একটি মসজিদে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হকের ওপর জুতা নিক্ষেপ ও মারধরের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মামলার আসামি করা হয়েছে। শনিবার (১১ জুন) পুলিশের এসআই শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। এর আগে, শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী বিহারি ক্যাম্প এলাকার আদমজী জামে মসজিদে জুমার নামাজের সময় ওই এসআইয়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, ‘মামলায় ৫০ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ১২০ থেকে ১২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তদন্তে বাকিদের নাম উঠে আসবে।’
মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘নামাজের আগে ইমাম সাহেব বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় এসআই আজিজুল হক পরিচয় দিয়ে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘‘ভারতের ঘটনা ভারতে থাক, আমাদের দেশে যেন এ নিয়ে কোন ধরনের সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়। আমরা যেন সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকি।’’ এ কথা বলার পরে কিছু উশৃঙ্খল যুবক হামলা চালায়।’
হামলার নেপথ্যে আরেকটি কারণ রয়েছে উল্লেখ করে এই পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘বিহারী ক্যাম্পের পাশে একটি মাঠ ছিল। মাঠে মাদক বিক্রি হতো। পরে আমাদের থানার ওসি ও এসআই আজিজুল হক বেশ কিছুদিন আগে মাঠ পরিষ্কার করে খেলাধুলার উপযুক্ত করে দিয়েছে। এ ছাড়াও সেখানে বেশ কিছুদিন মাদক এবং কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান চালানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেও হামলা হতে পারে। মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। আহত এসআই আজিজুল হক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি আশঙ্কামুক্ত। হামলার আরও কোন মোটিভ থাকলে তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী বিহারি ক্যাম্প এলাকার আদমজী জামে মসজিদে জুমার নামাজের সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হকের ওপর জুতা নিক্ষেপ ও মারধরের ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মুসল্লিরা জানান, নামাজের আগে ইমাম মুসল্লিদের উদ্দেশে খুতবার আলোকে নিয়মিত বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় এসআই সৈয়দ আজিজুল হক মুসল্লিদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে মুসল্লিরা ক্ষুব্ধ হয়ে তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মুসল্লিরা জুতা নিক্ষেপের পাশাপাশি মারধর করেন তাকে। এ সময় এসআইকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন মসজিদ কমিটির সভাপতি হাকীম মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন ও সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন রবিনসহ অনেকে। উত্তেজিত মুসল্লিরা তাদের ওপরও হামলা চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।