রাজশাহীর বাঘায় লাল কাপড়ে সংকেত দিয়ে ট্রেন থামিয়ে শতাধিক যাত্রীদের প্রাণ রক্ষা করেছিলেন গেটম্যান (অস্থায়ী) লায়েব উদ্দিন। তাকে পুরস্কৃত ও সম্মাননা প্রদান করার ঘোষণা দিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার।
তিনি বলেন, লায়েব উদ্দিনের বুদ্ধিমত্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে গেছে ওই ট্রেনের প্রায় তিন শতাধিক যাত্রী। তার কর্মদক্ষতায় রেলওয়ের সবাই মুগ্ধ। আগমী মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পাকশী ডিভিশনে রেল কর্তৃপক্ষ তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা সনদ, ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ প্রদান করবে।
তিনি জানান, লায়েব উদ্দিন বাঘার আড়ানী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কুশাবাড়িয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাশ্রমে আড়ানী-পুঠিয়া রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান হিসেবে কাজ করছেন। তবে ১ জানুয়ারি থেকে তাকে অস্থায়ী গেটম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকেই তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। আর একারণেই তিনি বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনার হাত থেকে সবাইকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন। আড়ানী রেল স্টেশনমাস্টার সদরুল আলম জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে আড়ানী বড়াল নদীর ব্রিজের পশ্চিম দিকে প্রায় ৯ ইঞ্চি রেলসড়ক ভাঙা দেখতে পান গেটম্যান লায়েব উদ্দিন। তিনি আমাকে বিষয়টি জানানোর আগেই ভাঙা স্থানে লাল কাপড়ের সংকেত দিয়ে রাখেন। কিন্তু এর আগেই পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি শনিবার সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে আড়ানী স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। এসময় লাল কাপড়ের সংকেত দেখে ভাঙা স্থান থেকে ৫০০ মিটার দূরে ট্রেনটি থামিয়ে দেন চালক। লায়েব উদ্দিনের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ওই ট্রেনের প্রায় তিন শতাধিক যাত্রী।
তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার পর রেললাইনের ভাঙা স্থান মেরামত করা হয়। দুই ঘণ্টাপর দুপুর ১২টা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
লায়েব উদ্দিন জানান, একটি মালবাহী ট্রেন আড়ানী বড়াল নদীর ব্রিজের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বিকট শব্দ হয়। সেই শব্দ শুনে সেখানে গিয়ে দেখি প্রায় ৯ ইঞ্চি রেললাইনের পাত ভাঙা। তাৎক্ষণিক লাল কাপড় উড়িয়ে সংকেত দিয়ে স্টেশন মাস্টারকে বিষয়টি জানাই।