সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ।
গ্রেফতারকৃতের নাম- মহসীন। এসময় তার হেফাজত থেকে অপরাধ কার্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের মোট ২৬ টি নানা ধরণের ব্যাংকের ডেভিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড এবং ০৪ (চার) টি মোবাইলসহ বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
এ সংক্রান্তে সিটিটিসির’র সিটি-ইন্টেলিজেন্স এ্যানালাইসিস বিভাগের ইনটিরিম মোবাইল মনিটরিং সেল (আইএমএমসি) টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আরিফুল হোসেইন তুহিন ডিএমপি নিউজকে বলেন, জনৈক কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রী এর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে রবিনসন হ্যানরী নামে একজনের সাথে পরিচয় হয়। পরবর্তীকালে উক্ত রবিনসন হ্যানরী জানায় সে মূল্যবান সামগ্রীসহ একটি পার্সেল বক্স তার স্ত্রীকে পাঠাবে। পরবর্তীতে জনৈক Ben Carlos (যার মোবাইল ০১৭১৮০৩৮১২১) নামের একজন তার স্ত্রীর মোবাইল নম্বরে ফোন করে জানায় সে ঢাকার এয়ারপোর্ট এয়ার ফ্লাইটে চাকুরি করে। একটি বক্স তার স্ত্রীর নামে বিদেশ হতে এসেছে। কিন্তু উক্ত বক্স ছাড়িয়ে নেওয়ার খরচ তার স্ত্রীকে বহন করতে হবে। যদি খরচ প্রদান করেন তাহলে প্যাকেটটি এয়ারপোর্ট হতে ছাড়িয়ে তার স্ত্রীর কাছে বাসায় পৌঁছে দিবে । Ben Carlos এটাও জানায় সে স্ক্যান করে দেখে যে বক্সের ভিতর বেশ কিছু পাউন্ড ও একটি সোনার চেইনসহ মূল্যবান মালামাল রয়েছে। তবে উক্ত পার্সেলটি ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য কিছু অতিরিক্ত খরচ (যেমন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কাস্টমস ও পুলিশকে) প্রদান করতে হবে। নতুবা এয়ারপোর্ট হতে ছাড় করা কঠিন হয়ে পড়বে। তার স্ত্রী সরল বিশ্বাসে টাকা প্রদান করতে চাইলে জনৈক Ben Carlos মোট চারটি একাউন্ট (ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিঃ ১৩৮৩২০৯০০০০০৫৬১৫; ব্রাক ব্যাংক লিঃ ১৫১১২০- ৪০৫২৪৩১০০১ ও এবি ব্যাংক লি. B০২০৭৫৪৯০২০০০, B০১৫১০২৮৪১৩০০) প্রদান করেন। পরবর্তীতে তার স্ত্রী রমনা থানার এবি ব্যাংকের কাকরাইল ব্রাঞ্চসহ অন্যান্য ব্রাঞ্চ হতে বর্ণিত একাউন্ট নাম্বারে সর্বমোট ১৫,০৬,০০০ (পনের লক্ষ ছয় হাজার) টাকা প্রেরণ করেন। তারপরে কোন ধরনের পার্সেল না পাওয়ায় তার স্ত্রী বুঝতে পারে সে প্রতারিত হয়েছে। এরপর ভুক্তভোগীর স্বামী জনৈক কাজী নজরুল ইসলাম রমনা মডেল থানায় একটি মামলা রুজু করেন।
তিনি বলেন, অনলাইন মনিটরিং ও তথ্য প্রুযুক্তির সহায়তার এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে শনাক্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (বুধবার) রাত ১১:৩০ টায় আশুলিয়া থানার খাগান এলাকা থেকে জব্দকৃত মালামালসহ মহসীনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে রমনা মডেল থানায় রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালত প্রেরণ করলে ০১ (এক) দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সিটি-ইন্টেলিজেন্স এ্যানালাইসিস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আতিকুল হক প্রধান, পিপিএম (সেবা) এর তত্ত্বাবধানে, আইএমএমসি টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আরিফুল হোসাইন তুহিন ও অত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) কে এম আব্দুল্লাহিল মারুফ এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।