কুয়েতে মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা আমির হোসেন ওরফে সিরাজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। কুয়েতি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গত ১৭ আগস্ট নরসিংদীর মাধবদী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। আমির হোসেন ও সিরাজ উদ্দিন দুই নামেই পরিচিত তিনি।বুধবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জিসানুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আমিরসহ চারজন মিলে ভালো বেতনে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কুয়েতে মানবপাচার করে আসছিলেন। প্রতারণার মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন তারা। কুয়েতে তিনজন গ্রেফতার হলেও পালিয়ে আসেন আমির হোসেন। এরপর দেশে এসে আত্মগোপনে চলে যান।
জিসানুল হক বলেন, চক্রের সদস্যদের হাতে ৯ শতাধিক ভুক্তভোগী কুয়েতে পাচারের শিকার হয়। জনপ্রতি তাদের কাছ থেকে ৬ লাখ বা তারও বেশি টাকা হাতিয়ে নেয় ওই চক্র। পাচারের ফাঁদ হিসেবে গমনেচ্ছুদের ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কুয়েতে পাঠাতেন। ভুক্তভোগীরা সেখানে গিয়ে চাকরি না পেয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতেন। সেখানে খাদ্য ও বাসস্থান সংকটের ফলে উদ্বাস্তু অবস্থায় কুয়েতের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন তারা। পাচারের পর কুয়েতে ভুক্তভোগীদের আটকে রেখে নির্যাতন চালাতো ওই চক্র।
তিনি বলেন, প্রতারিত হওয়ার পর কয়েকজন ভুক্তভোগী কুয়েতের সরকারি এজেন্সি ও জনশক্তি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর কুয়েত পুলিশ বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। অভিযোগের সত্যতা পেলে কুয়েত আদালতে এই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। এই চক্রের মূল হোতা একজন কুয়েতি এবং তিন বাংলাদেশি চক্রের অন্যতম সদস্য। এরপর কুয়েত আদালত তিন বাংলাদেশিকে তিন বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। এবং কুয়েতের নাগরিক ও চক্রের মূল হোতাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেয়।
এএসপি বলেন, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী তিন বাংলাদেশি যেকোনো উপায়ে পালিয়ে দেশে চলে আসেন। একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের অন্যতম হোতা আমির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া অপর দুই আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।