বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় পুলিশ হেফাজত হতে পলাতক আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্ক্যামিং চক্রের মূলহোতাসহ দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
গ্রেফতারকৃতরা হলো HAKAN ZANBURKAN ও মোঃ মফিউল ইসলাম। এসময় তাদের হেফাজত হতে ৫টি মোবাইল, ১টি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি ২০২২) রাজধানীর গুলশান-১ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি’র ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ।
আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি ২০২২) দুপুর ১২:৩০টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান, বিপিএম (বার)।
সিটিটিসির প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত HAKAN ZANBURKAN তুরস্কের নাগরিক। তিনি আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্ক্যামিং চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। গত ২ জানুয়ারি ২০২২ হতে ৪ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, ইউএসএ, ভারত, তুরস্ক, সৌদিআরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০ টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্ক্যামিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে ৮৪ বার টাকা উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করেন। ইস্টার্ন ব্যাংক লিঃ এন্টি স্ক্যামিং টেকনোলজি ব্যবহার করায় এ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয়ে হ্যাকার কর্তৃক স্ক্যামিং রোধ করতে সক্ষম হয়।
তিনি বলেন, মিঃ HAKAN ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের পল্টনবাজার পুলিশ স্টেশনের এটিএম স্ক্যামিং মামলায় অন্য এক তুরস্কের নাগরিক এবং ২ বাংলাদেশীসহ গ্রেফতার হন। উক্ত ঘটনায় মিঃ HAKAN সহ তারা ভারতের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে কার্ড ক্লোনিং করে প্রায় ১০ লাখ রুপি আত্মসাৎ করেন। ভারতে প্রায় ২০ মাস জেলে থাকার সময় আগরতলার GOVIND BALLABH PANT HOSPITAL (GBP HOSPITAL) এর পুলিশ হেফাজত হতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি সুকৌশলে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে এক ভারতীয় ব্যক্তির সহায়তায় দুই লাখ রুপির বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপালে পৌঁছান। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিজ দেশে ফিরে যান। ইতোপূর্বে তিনি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছেন। সর্বশেষ মিঃ HAKAN গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পুনরায় বাংলাদেশে আসেন। তিনি রাজধানীর দ্যা ক্যাপিটাল হোটেল অবস্থান করছিলেন।
এই চক্রে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারত, বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত আছে মর্মে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
এ সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃতদের পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি রুজুকৃত মামলায় রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহফুজুল ইসলাম, পিপিএম (বার) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়।