রংপুরে প্রলোভন দেখিয়ে ৭৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্ত্রীসহ জিনের বাদশাকে গ্রেফতার করেছে মহানগর ও জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
জানা যায়, জিনের বাদশা মার্কিন ডলার, প্রাচীন ধাতব মুদ্রা, স্বর্ণ মূর্তি, মূল্যবান পাথরের মূর্তি সংগ্রহ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা। শুধু তাই নয় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শত শত কোটি ডলারের মালিক হবার সঙ্গে সঙ্গে তা ব্যাংকে জমা হবে। ব্যাংক হতে টাকা তুলে বস্তায় করে তারা বাড়িতে পৌঁছেও দিবেন। এসব কথার ফাঁদে ফেলে ব্যবসায়ী মামুনুর রহমানকে দিয়ে ব্যাংক হিসাব চালু করে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর করা চেকবই হাতিয়ে দেন প্রতারক দম্পতি।
গ্রেফতারকৃতরা হলো সবুজ মিয়া ওরফে সবুজ মেম্বার (৪৩) তার স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৩)। রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর চৌধুরীপাড়া গ্রামে তাদের বাড়ি।
রবিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগর ও জেলা সিআইডি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আতাউর রহমান।
অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আতাউর রহমান জানান, গত শনিবার দিনগত রাতে মমিনপুর ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই দম্পতিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রংপুর নগরের পশ্চিম বাবুখাঁ এলাকার ব্যবসায়ী মামুনুর রহমান বাদি হয়ে গত বছরের জুলাই মাসে মহানগর কোতোয়ালি থানায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ একটি মামলা করেন।
মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মামুনুর রহমানের মনা ইলেকট্রানিক্স নামে শাপলা চত্বরে একটি দোকান রয়েছে। ২০০৫ সালে সবুজ মিয়া ওরফে সবুজ মেম্বার ও পারভীন বেগমের সাথে মামুনুর রহমানের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগে সবুজ মিয়া নিজেকে জিনের বাদশা হিসেবে পরিচয় দেয়। এ সময় প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রকৃত নাম ঠিকানা ও পরিচিতি গোপন রাখেন তারা।
তিনি আরও বলেন, প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগী মামুনুর রহমানকে ব্যবসায়িক ভাবে লাভবান হওয়াসহ অল্পদিনের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক হবার প্রলোভন দেখান। তাকে ইউএস ডলার, প্রাচীন ধাতব মুদ্রা, স্বর্ণ মূর্তি, মূল্যবান পাথরের মূর্তি সংগ্রহ করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। শুধু তাই নয় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শত শত কোটি ডলারের মালিক হবার সঙ্গে সঙ্গে তা ব্যাংকে জমা হবে। ব্যাংক হতে টাকা তুলে বস্তায় করে তারা মামুনুর রহমানকে বাড়িতে পৌঁছেও দিবেন। এসব কথার ফাঁদে ফেলে ব্যবসায়ী মামুনুর রহমানকে দিয়ে ব্যাংক হিসাব চালু করে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর করা চেকবই হাতিয়ে নেন প্রতারক দম্পতি। সহজ সরল বিশ্বাসে নিজের জমিজমা বিক্রয় করে সবুজ ও পারভীন দম্পতিকে কয়েক দফায় ৭৪ লাখ টাকা প্রদান করে ব্যবসায়ী মামুনুর রহমান। দীর্ঘদিন ধরে ঘটনাটি চেপে রাখলেও গত বছর ২৭ জুলাই রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় প্রতারণার বিষয়টি তুলে ধরে ভুক্তভোগী নিজে বাদি হয়ে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন। পলাতক এ দুই আসামিকে শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি। ইত্তেফাক।