রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় একটি ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো জুয়েল, জাহাঙ্গীর ওরফে মুটো জাহাঙ্গীর ও নুরুজ্জামান ওরফে মামুন।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর, ২০২১) ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে জুয়েল, বেগুনবাড়ি থেকে জাহাঙ্গীর ও নোয়াখালী জেলা থেকে নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর, ২০২১ (মঙ্গলবার) রাতে তেজগাঁও থানার মেরিন রেস্তোরার সামনে ভিকটিম কেশব রায় পাপনকে অজ্ঞাতনামা অপরাধীরা ধারালো অস্ত্র দ্বারা অঘাত করে গুরুতর জখম করে। কয়েকজন পথচারী মিলে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ৬ অক্টোবর, ২০২১ তারিখে তেজগাঁও থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সালাহ উদ্দিন মিয়া জানান, উক্ত মামলা তদন্তকালে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে হাতিরঝিল এলাকা থেকে অভিযুক্ত জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বেগুনবাড়ি এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর ও নোয়াখালী জেলা থেকে নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, ভিকটিম কেশব রায় পাপন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে একটি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সংক্রান্ত পার্টটাইম কাজ করে। প্রতিদিনের ন্যায় কাজ শেষে রাতে সাইকেলযোগে মনিপুরিপাড়ার বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমকে ছিনতাই এর উদ্দেশ্যে পথরোধ করে। ভিকটিম ছিনতাইয়ে বাঁধা দিলে তার সাথে ছিনতাইকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ছিনতাইকারীরা এ সময় ভিকটিমের মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যেতে চাইলে সে ছিনতাইকারী নুরুজ্জামানকে জাপটে ধরে। এসময়ে গ্রেফতারকৃত নুরুজ্জামান ধারালো সুইচ গিয়ার দিয়ে ভিকটিম কেশবকে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনের ফলে ভিকটিম নিস্তেজ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে। কয়েকজন পথচারী মিলে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিমের মৃত্যু হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণের আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে মর্মে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।