একজন অদম্য যোদ্ধা সুরাইয়া আক্তার। স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের ন্যায় হাতে লেখার শক্তি নেই তার। পা দিয়ে লিখেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন তিনি।শনিবার (২ অক্টোবর) ঢাবির ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন সুরাইয়া। তার কেন্দ্র ছিল ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)।
সুরাইয়া আক্তার শেরপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। তার বাবা একজন শিক্ষক। সে এসএসসিতে জিপিএ ৪.১১ এবং এইচএসসিতে জিপিএ ৪.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। সুরাইয়া কথা বলতে পারেন না, তবে চোখের ইশারায় মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন।
জানা গেছে, শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নেন সুরাইয়া আক্তার। স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের মত তিনি চেয়ারে বসতে না পারায় কৃষি অনুষদের কীটতত্ত্ব বিভাগের ল্যাবরেটরির মেঝেতে বসে পরীক্ষা দেন সুরাইয়া।
বাকৃবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, মেয়েটিকে তার মা নিয়ে এসেছিলো। মায়ের কথা অনুযায়ী যথাসময়ে পরীক্ষার হলের মেঝেতে তাকে বসতে দেওয়া হয়। পরীক্ষার হলের পাশেই একটি চেয়ারে তার মাকেও বসতে দেওয়া হয়। কারণ ইশারায় সুরাইয়া কী বলতে চাচ্ছে, সেটি তার মা ছাড়া কেউ বুঝতে পারছিলেন না।
তিনি বলেন, ‘সুরাইয়া প্রথমদিকে পা দিয়ে লেখার সময় উত্তরপত্রটি ভুলে নষ্ট হয়ে যায়। এসময় সে চিৎকার করতে থাকে। পরিদর্শকরা কেউ বিষয়টি না বুঝতে পারায়, তার মাকে ডাকা হয়। তার মা এসে বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে তাকে আরেকটি উত্তরপত্র দেওয়া হয়। সে ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করেছে।
মনের ইচ্ছা শক্তি থাকলে সবকিছুতেই সফলতা পাওয়া যায়। অদম্য যোদ্ধা সুরাইয়ারাও সমাজের বোঝা হয়ে বাঁচতে চায় না। শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে সেও জীবনকে এগিয়ে নিতে চায়।