সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো শক্তিশালী করে সব স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। কাঙ্ক্ষিত সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে তাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) অনলাইনে আয়োজিত কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি) প্রকল্পের আওতায় করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত যে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো যতো বেশি শক্তিশালী করা যাবে ততো বেশি উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আর এজন্য দরকার জনগণের অংশগ্রহণ।
মো. তাজুল ইসলাম আরো বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে, এ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সেবা দেওয়ার জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মানুষ যখন জানবে, সমাজ হতে অন্যায়-অবিচার নির্মূল করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন, তখনই আস্থা ও বিশ্বাস জন্মাবে।’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের জন্য শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষক-শ্রমিক, মৎস্য চাষি অথবা অন্য যে কোনো পেশার মানুষ হোক, সবাইকে স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কাউকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ সকল অবকাঠামো নির্মাণ অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। শুধু শহরে নয়, প্রত্যন্ত গ্রামকেও পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে হবে। গ্রামগুলো এখনো অক্ষত রয়েছে, সেগুলো ক্ষত-বিক্ষত করা যাবে না। এজন্য গ্রামাঞ্চলে যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরো বলেন, ‘এ দায়িত্ব পালনে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীল হতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদে এসে মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন এবং আবেদন প্রক্রিয়া যেন দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি হয়, সেটিও নিশ্চিত করা হবে।’
ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদে এসডিজিবান্ধব পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, বার্ষিক প্রতিবেদন প্রস্তুত ও প্রকাশনা এবং বেশ কিছু নীতি প্রণয়নবিষয়ক কার্যক্রমে ইএএলজি প্রকল্পের ভূমিকা প্রশংসনীয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি। এছাড়া প্রকল্পভুক্ত নয়টি জেলার জেলা প্রশাসক, উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার (ডিডিএলজি), ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর এবং প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় অংশ নেন।
এসময় প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের মধ্যে নগদ অর্থ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হাত ধোয়ার জন্য পানির কল, সাবান, কাপড়ের মাস্ক ও সার্জিক্যাল মাস্ক বিতরণ করা হয়।