আজ ১ সেপ্টেম্বর ধোবাজোড়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর মিটামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ধোবাজোড়া গ্রামে আবদুল মজিদ ভূইয়ার বাড়িতে রাজাকার কোরবান আলী নেতৃত্বে দীর্ঘ সময় পাক হানাদার বাহিনী হামলা চালায়। এ সময় তারা দুইটি বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
যাওয়ার সময় ধোবজোড়া গ্রাম থেকে বাছাই করে নেতৃস্থানীয় বৃদ্ধিজীবী ও বিশিষ্ট ব্যক্তি আবদুল মজিদ ভূইয়া, আঃ আজিজ ভূইয়া , এডভোকেট আঃ মতিন ভূইয়া, আবদুল রাশিদ ভূইয়া হবি , আবদুল মান্নান ভূইয়া, লোকমান হোসেন ভূইয়া ,রোকুনুজ্জামান ভূইয়া, আবু জাহের পার্শ্ববতী গ্রামের আঃগনি ভূইয়ার বাড়ি থেকে ছিদ্দুকুর রহমানসহ ১৯ জনকে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়া ১৯ জনকে ইটনা পাকবাহিনীর ক্যাম্পে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর একজন ব্যক্তির লাশও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই নারকীয় হত্যাকান্ড থেকে বর্তমান রাষ্ট্রপতির বড় ভাই মোঃ আবদুল গনি, রাষ্ট্রপতির ভাতিজা বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট রফিকুল আলম রতন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবদুস শাহিদ ভুঞা আল্লাহর অশেষ রহমতে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই হত্যাকান্ডের নৈপথ্যের নায়ক ছিলেন ঘাগরা ইউনিয়নের রাজাকার চেয়ারম্যান অলি নেওয়াজ ভূইয়া ও রাজাকার কোরবান আলী। পরে রাজাকার কোরবান আলীকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কিশোরগঞ্জ থেকে ধরে কেয়ারজোর নিয়ে হত্যা করে। রাজাকার অলি নেওয়াজ ভূইয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতির পরিবার তৎকালীন ভারতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ধোবাজোড়া গ্রামের আবদুল মজিদ ভুইয়ার বাড়িতে ছিলেন। রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবার আগষ্টে ভারতে চলে যাওয়ায় ১ সেপ্টেম্বরের ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
শহীদদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। পেরিয়ে গেছে ৫০টি বছর। কিন্তু ধোবাজোড়া গ্রামে এই গণহত্যার স্মৃতি রক্ষার্থে নতুন প্রজন্মের জন্য গড়ে উঠেনি কোন স্মৃতিফলক। শহীদদের তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়নি তাদের নাম! গভীর শোক ও শ্রদ্ধা রইল ধোবাজোড়ায় নিহত সকল শহীদের প্রতি ।
তথ্য সুত্র:
খাদেমুল বাহার
সহকারী পুলিশ পরিদর্শক
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা।