অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের প্রায় ১৫ লাখ টিকার ঘাটতি পূরণে সম্ভাব্য সব সোর্সের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বাংলাদেশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন রাষ্ট্রের কাছ থেকে অতিব প্রয়োজনীয় অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাওয়ার আশ্বাস মিলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা উদ্বৃত্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা থেকে ২০ লাখ টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে আলোচনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থোনিও ব্লিনকেনের সরাসরি সাক্ষাতের অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আগামী সপ্তাহে মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের আয়োজনে পূর্ব নির্ধারিত দু’টি বহুপক্ষীয় সভায় অংশ নিয়ে তিনি ওয়াশিংটন যেতে মনঃস্থির করেছেন।
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী প্রায় ১৫ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। তাছাড়া অন্য দেশ বা কোম্পানীর টিকারও প্রয়োজনীয় মজুত না থাকায় চলমান টিকা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সঙ্কট কাটানোর নানা উপায় নিয়ে ভাবছে সরকার- এমনটাই দাবি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের। বুধবার সন্ধ্যায় নিজ দপ্তরের বাইরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সচিব বলেন,
দ্বিতীয় ডোজের ঘাটতি পূরণে আমরা সম্ভাব্য সব রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের কাছে অতিরিক্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আছে। কিন্তু তাদের ঔষধ প্রশাসনের অনুমতির একটি জড়িয়ে আছে, ফলে তারা এ নিয়ে এখনও কিছু বলেনি। তবে আমরা আশাবাদি। অন্য টিকার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকারও কিছু টিকা দিবে। দ্বিতীয় ডোজের ঘাটতি পূরণে সরকারের তরফে যুক্তরাষ্ট্রে পাশাপাশি জাপানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, জাপানের কাছে অতিরিক্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আছে।
তারা তাইওয়ানকে কিছু অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়েছে। এটা রাজনৈতিক কারণে হয়তো দিয়েছে। বন্ধু রাষ্ট্র হিসাবে আমরাও তাদের কাছে এ বিষয়ে সহায়তা চেয়েছি। সরকারের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন আরও বলেন, রাশিয়া থেকে টিকা কেনার আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। এ সপ্তাহেই আমরা বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি জানান চীনের সঙ্গে এরইমধ্যে নন-ডিসক্লোজার সই হয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত এক অনুষ্ঠানে বুধবার বলেছেন, টিকা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে উৎসাহব্যঞ্জক আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, উনি হয়তো উৎসাহব্যঞ্জক বলতে আগামী সপ্তাহে চীন থেকে যে ছয় লাখ টিকা উপহার হিসেবে আসছে তা বুঝিয়েছেন। তাছাড়া সিনোফার্মের কাছে আমরা কাগজপত্র পাঠিয়েছি। এখন ওদের উত্তরের অপেক্ষায় আছি। সিনোভ্যাককে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিয়েছে। আমাদের দেশেও জরুরি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা তাদের সঙ্গেও আলাপ শুরু করব।
তা ছাড়া চীনের সঙ্গে কো-প্রোডাকশনের বিষয়েও আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে বেশ কিছু ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি আছে, যাদের টিকা তৈরির সক্ষমতা আছে। টিকার সঙ্কট কাটাতে নানা দিক এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে দাবি করেন পররাষ্ট্র সচিব।