মুনিয়া হত্যা মামলায় সবাই নিরব হয়ে গেলেও জেগে ওঠল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কয়েক সপ্তাহ ধরে মুনিয়া হত্যার বিষয়ে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। সবাই নিরবতা পালন করে যাচ্ছেন।মুনিয়ার হত্যা মামলার বিচার হবে নাকি হবে না তা নিয়ে সাধারন মানুষের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ। বসুন্ধরার চেয়ারম্যান তানভীর সোবহান প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়া ও তার বিশাল অর্থবিত্ত এবং ক্ষমতার দাপটে কোন দিকে যাবে মুনিয়া হত্যা মামলার ভবিষ্যৎ।
সম্প্রতি মুনিয়া হত্যা মামলার বিষয়ে চলতি মাসের ৬ জুন দুপুর ১২ টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধন থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরসহ এ ঘটনায় জড়িত সকলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মামলার বাদীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম ইনজামাম বলেন, ঘটনার প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলার কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি। এমনকি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়নি। তাহলে প্রশ্ন আসে, অর্থনৈতিক প্রভাবশালীর কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের কর্তারা সবাই জিম্মি কিনা!
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. এরশাদ হোসাইন বলেন, মুনিয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছি। অথচ এটি কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা প্রমাণ করবে বিচার বিভাগ। কিন্তু এর আগেই আমরা এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে মুনিয়ার মৃত্যুর বৈধতা দিয়ে দিচ্ছি।
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ ফাহিম বলেন, হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি সায়েম সোবহান আনভীর জনস্মমুখে আসলেও তাকে এখনো গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এরইমাঝে তিনি দেশের একটি সনামধন্য ফুটবল ক্লাবের সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছেন। আবার ক্র্যাবের (ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন) সদস্যরা তার বাসায় গিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। এ ঘটনাগুলো ক্রমেই মুনিয়া হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়ে এ ধরনের ঘটনাকে আরও উসকে দিচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এসময় মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীসহ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৬ এপ্রিল ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজ ছাত্রী মোশারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গুলশান থানায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত।