কুমিল্লা সদরে বাড়ি ঘর নির্মাণের সময় চাঁদাবাজী যে করবে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। কুমিল্লা সদরে চাঁদাবাজী চলবে না বলে ঘোষনা দিয়েছেন সদর এমপি আকম বাহা উদ্দিন বাহার। এছাড়াও কুমিল্লায় বাড়ি ঘর নির্মাণ ও বাড়ির নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করার নামে চাঁদাবাজী বন্ধ করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম।
চাঁদাবাজী বন্ধ করতে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা এবং সদর আসনের এমপির ঘোষণা এরপরও চাঁদাবাজী চলছে কোন অদৃশ্য শক্তির দাপটে । চাঁদাবাজীতে বাধা দেওয়ার জের ধরে ক্ষমতাসীন দলের একজন জনপ্রিয় যুবলীগ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ীঘর ভাংচুরের ঘটনা কুমিল্লাবাসীকে ভাবিয়ে তুলছে।
মহানগর যুবলীগ নেতা জালাল উদ্দিন ভুঁইয়ার সংবাদ সম্মেলন :
চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় নেতা জালাল উদ্দিন ভুঁইয়ার বাড়ীঘর ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে দিনদুপুরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনী। প্রকাশ্যে জনসম্মূখে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে গতকাল বৃহ:পতিবার দুপুরে বলরামপুরের সিংগাপুর মার্কেটে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলন করেন কুমিল্লা মহানগর যুবলীগ সদস্য জালাল উদ্দিন ভুইয়া।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ৩০ মে স্থানীয় দিদার সমিতি এলাকায় একটি নির্মানাধীন বাড়ির মালিক সফিকুর রহমানের কাছে চাঁদা দাবি করে স্থানীয় সন্ত্রাসী মনির ও মুনাফ মিয়া। বাড়ির মালিক সফিকুর রহমান ও তার ব্যবসায়িক পার্টনারগন নিরুপায় হয়ে আমার নিকট সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন সফিকুর রহমান সাহেব বাড়ির কাজের নির্মাণ সামগ্রী আমার দোকান থেকে ক্রয় করে নিয়েছিলেন। ঘটনার দিন মনির ও মুনাফ তাদের কয়েকজন সহযোগিদের নিয়ে সফিকুর রহমানের বাড়ির কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। সফিকুরে রহমান আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে মনির ও মুনাফ মিয়াকে বুঝানোর চেস্টা করলে তারা বাড়ির মালিক ও আমার নিকট টাকা দাবী করে খারাপ আচরন করলে আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দোকানের দিকে রওনা দিই। এর মধ্যে মনির ও মুনাফ এলাকার রতন খান ও শিমুল মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় একশ দেড়শ লোকজন দেশীয় অস্ত্র দা-ছেনী ও অস্ত্র নিয়ে জালাল উদ্দীনের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স জালাল কন্সট্রাাকশনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে ও দোকানের কর্মচারীদের মারধর করে। এসসময়ে সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে এলাকাবাসীকে ভয় দেখখিয়ে জালাল উদ্দীনের বাড়িতেও হামলা ভাংচুর চালায়। এ সময় জালাল উদ্দীনের মা বাঁধা দিলে তাকেও পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। বাড়িতে হামলা চালিয়ে ফেরার পথে স্থানীয় দিদার মিয়ার বাড়ি, স্থানীয় মেম্বার মান্নান মিয়ার বাড়িসহ দৌলতপুর এলাকার আরোও ৯টি বাড়িতে ভাংচুর চালায় তারা।
এ দিকে জালাল উদ্দিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে দোকানের ক্যাশে থাকা ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। তিনটি মোটরসাইকেল ও ২টি অটোরিকশা ভাংচুর করে। এছাড়া তার মা লুৎফা বেগমের ব্যাগে থাকা ৫০হাজার টাকা ও স্বার্নালংকার ছিনিয়ে নেয় তারা। এই ঘটনায় ১ জুন জালাল উদ্দিন ভুঁইয়া বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত একাধিক সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ নেতা জালাল উদ্দিনের মা লুৎফা বেগম জানান, যারা হামলা ও মারধর করে ভাংচুর লুটপাট করেছে থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর আসামিরা আবারও প্রকাশ্যে নানা ধরনের হুমকি ধমকি দিচ্ছে। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাদের ছবি ও ভিডিও রয়েছে। দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার পুর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদের নিকট অনুরোধ জানান লুৎফা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে বাড়িঘর ভাংচুর ও হামলার শিকার হওয়া ক্ষতিগ্রস্থ মেম্বার মান্নান দৌলতপুর এলাকার সামাদ মিয়া, হোসনেয়ারা বেগম, রোজিনা বেগম, দেলোয়ার হোসেন, মুজিবুল হকসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।