কুমিল্লায় কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকদের একটি সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান হতে পারে কুমিল্লা প্রেসক্লাব। একসময় এ প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য ছিল। সুশিক্ষিত ও গুণী সাংবাদিকগণ নেতৃত্বে ছিলেন। কমিটির নির্বাচন নিয়ে উৎসবের আমেজ ছিল প্রেসপাড়াসহ সকল মহলে। এখন এ ক্লাবের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব কার হাতে বলা মুশকিল।
দীর্ঘ বছর ধরে নেতৃত্ব সংকট সৃষ্টির কারণে সাংবাদিকদের এ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি এখন রীতিমত তলানীতে। বলা যায়, এখন আর প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব মূলধারার সাংবাদিকদের হাতে নেই। গত প্রায় এক যুগ ধরে প্রেসক্লাব হ য ব র ল অবস্থায় ক্রান্তিকাল পার করছে। ক্লাবের গঠনতন্ত্র মূলত অকার্যকর। দীর্ঘ বছর ধরে গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনা হয় না।মিটিং নেই, সম্পদের হিসাব নেই রেজুলিউশন হয় না, আয়-ব্যয়ের হিসাব নেই, ক্লাবের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের তোয়াক্কা নেই। পাঁচ বছর ধরে আহবায়ক কমিটির কার্যক্রম চলছে, যা রীতিমত হাস্যকর। কথিত কমিটির কয়েকজন মিলে মূলধারার সাংবাদিকদের কোণঠাসা করে ভঙ্গুর করে রাখা হয়েছে এ সংগঠন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মেয়াদান্তে নির্বাচনের মাধ্যমে সাংবাদিকগণ তাদের নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন এটাই স্বাভাবিক। শুধু কার্ডধারী অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও ক্যামেরা কাঁধে ফেসবুক কেন্দ্রীক কর্মী নয়- কে বা কারা প্রকৃত সাংবাদিক, কারা প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা রাখেন তা ঠিক করবেন সাংবাদিকগণ। প্রকৃত সাংবাদিকগণ অদৃশ্য অপশক্তির ভয়ে কোণঠাসা থাকবেন কেন? অনৈতিক ও অনভিপ্রেতভাবে প্রেসক্লাবের উপর অবৈধ হস্তক্ষেপ কারো কাম্য হতে পারে না। লুটেরা, ধান্ধাবাজ, সুবিধাভোগী কিছু নামধারী সাংবাদিক আহ্বায়ক কমিটির নামে প্রেসক্লাবের সম্পদ লুটেপুটে নেয়ার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের ক্লাবের বাইরে রাখার রহস্যজনক ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে ঐ চক্র। বলা ভালো, প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব (?) অর্থাৎ আরেকটি আহবায়ক কমিটি সৃষ্টির জন্য নাকি একটি সভা আহবান করা হয়েছে- এমন খবর পেলাম। একজন সিনিয়র সদস্য হয়েও জানি না। কে সভা আহবান করলো, কোন্ মিটিংয়ে এমন সভা কোথায় আহবানের সিদ্ধান্ত কারা নিলো তাও জানি না। কোনো চিঠিও পাইনি। অবশ্য চিঠি দেয়ার মতো কেউ আছে বলেও জানি না। দু’একজন মুখে মুখে সভার কথা জানালো। তারা দায়িত্ব পেল কীভাবে বুঝি না। একটি কথিত আহবায়ক কমিটি থাকতে আরেকটি কেন, ঐ কমিটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক’দিন পর নির্বাচন দিলেই তো হয়।
হায়- প্রেসক্লাব, তোমার নেতৃত্ব আজ কোন্ পথে? তবে বলি, কুমিল্লার প্রকৃত সাংবাদিকগণকে ক্লাবে ভর করা কিছু অদৃশ্য ভাইরাসের সংক্রমণের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। সাংবাদিকতাকে বাঁচাতে হবে, প্রেসক্লাবের ঐতিহ্যও রক্ষা করতে হবে। সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদা ও ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে পেশাদার সাংবাদিকগণের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।
লেখক: সাংবাদিক নজরুল ইসলাম দুলাল