করোনা প্রার্দুভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার মাঝেও পরীক্ষার নাম করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার ফি নিয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সরকারীভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন প্রকার ফি নিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরকারী নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রথম শ্রেনী থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে পরীক্ষা ফি আদায় করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। তবে নারায়ণগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন করোনাকালীন সময় স্কুলগুলোতে এভাবে ফি নিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার কোন নির্দেশনা নাই। তবে পরীক্ষা ফি নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট কেউ গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজি নন।
জানা গেছে, দেশে সালে করোনা প্রার্দুভাব শুরু হলে ২০২০ সালের ১৬ মার্চ সরকার সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করেন। লকডাউনের কারণে কয়েকটি পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার। করোনার কারণে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অটোপাশের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সবশেষ তথ্যমতে আগামী ৩১ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আবারো করোনা দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়া আগামী ২৩ মে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মাউশি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর ব্যাপারে বেশ কিছু গাইড লাইন দেওয়া হয়েছে। ওই গাইড লাইনে উল্লেখ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দুই মাসের মধ্যে কোন প্রকার পরীক্ষা নেওয়া যাবেনা।
সরকারী নিদের্শনা ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দেওয়া গাইড লাইনের তোয়াক্কা না করে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেনী পর্যন্ত প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে পরীক্ষা ফি আদায় করে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহন করছেন।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, করোনা কালীন সময় এক সময়েরর অধিক সময় ধরে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েকমাস পূর্বে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও স্কুলের বেতন, জেনারেট বিল, সহ যাবতীয় সকল খরচই স্কুল কর্তৃপক্ষ আদায় করছেন। এর মধ্যে পরীক্ষার জন্য ৩০০ টাকা করে ফি আদায় করেছেন তারা। ১ এপ্রিল থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। ৭এপ্রিল উক্ত পরীক্ষার খাতা জমা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনের কারনে ওই সময়ে আর খাতা জমা নেওয়া হয়নি। স্কুল থেকে শুধুমাত্র একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি প্রশ্ন গুলো গুগল ক্লাস রুম অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উত্তর লেখার জন্য স্কুল থেকে খাতা দেওয়া হয়েছে।
কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার ফি নিয়ে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারেন কিনা এ বিষয়ে সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আফরোজা বানু এর কাছে জানতে চাওয়া হলে বলেন, সরকারী নিয়মগুলো টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। সেভাবে আমরাও জানি, স্কুলগুলোও জানে, আপনারাও জানেন। দেশের প্রতিটি মানুষ জানে। এখন যদি এটা কেউ না মানে তখন আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। কিন্তু এই মুহূর্তে কেউ পরীক্ষার জন্য ফি নিতে পারে না।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার শরিফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার জানামতে বর্তমানে স্কুলগুলোতে পার্বিক পরীক্ষা নেওয়ার কোন নির্দেশনা নেই। যার যার বাসায় থেকে অনলাইনে শ্রেনী কার্যক্রম চলছে।
নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে পরীক্ষা ফি আদায় করার ব্যাপারে তিনি বলেন, এমন কোন নির্দেশনা আমার জানা নাই। আপনার কোন বক্তব্য থাকলে আপনি স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি মিডিয়াতে নিয়ে আসেন। আপনি আপনার কাজটা করেন আমরা আমাদের কাজটা করবো।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজ এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কমল কান্তি সাহার সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।
স্কুলটির শিফট ইনচার্জ কামরুল ইসলামে সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এ বিষয়ে তিনি এখন কথা বলতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজ এর পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি চন্দন শীল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন তিনি কোন কোন সাক্ষাতকার দিবেন না।