“করোনা প্রেক্ষাপটে অসহায় মানুষদের সহযোগিতার পাশাপাশি ও নিজস্ব খরচে করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পুর্ন করতে প্রতিষ্ঠা করা হয় “বিবেক”নামে সামাজিক সংগঠন। গত ৩০ মার্চ ২০২০ সালে যাত্রা শুরু হয় সামাজিক সংগঠন বিবেক”র কার্যক্রম”
গত প্রায় একটি বছর বিশ্ব জুড়ে কভিড ১৯ নামক যে অজানা ভাইরাসের তান্ডবে মানবজীবন ভয়াবহ ভাবে বিপর্যস্ত সে বিপর্যয় থেকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও রেহায় পাইনি।এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে আমাদের জনজীবনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিলো, বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল সকল প্রকার সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল জনসমাগম ও যানচলাচলের উপর, আর লক ডাউনের আওতায় আনা হয়েছিলো বিভিন্ন এলাকা যার ফলস্বরূপ অগণিত মানুষর আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে নেমে এসেছিলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় যা ধারাবাহিক ভাবে বাড়তে থাকে।
মানুষের এই অসহায় আর্তনাদে রক্তক্ষরণ হয় আমার হৃদয়ে, তখনই নিজের সাধ্যের সবটুকু উজার করে বিভিন্ন সহায়তা নিয়ে পৌঁছে যাই মানুষের দ্বারে দ্বারে এরমাঝে পালাক্রমে বাড়তে থাকে সংক্রমণ আর বিপর্যয় হাল না ছেড়ে স্নেহের কয়েকজন অনুজদের নিয়ে অসহায় মানুষদের সেবার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে-
৩০শে মার্চ ২০২০ সৃষ্টি করি “বিবেক” নামক সামাজিক সংগঠন, সেই সংগঠনের ব্যনারে নিজেদের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে যখন করোনা আক্রান্ত ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়াচ্ছিলাম তখনই দড়জায় কড়া নাড়লো সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়, যা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে মর্মান্তিক! “করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ”
তখন বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে করোনা আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন মানুষ মারা যান, বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা জানতে পারি মারা যাওয়ার পর ঐসব মৃতদেহ নিয়ে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, ও পাড়াপ্রতিবেশির অবহেলা ও নিষ্ঠুরতার কথা, যা একজন মানুষ হিসেবে আমার ও আমাদের প্রতিষ্ঠিত “বিবেক” সংগঠনের কেউই মেনে নিতে পারিনাই, তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের কুমিল্লায় যদি কেউ এই মহামারি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তাহলে আমরা সেই মৃতদেহ দাফন কাফন ও সৎকার করবো, মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ কৃপায় আমরা আজ অবধি ১০০ জনের উপর বিভিন্ন ধর্মের অবহেলিত মৃতদেহ দাফন কাফন, সৎকার ও কবরস্থ করেছি এবং বিভিন্ন সহযোগিতা (এম্বুলেন্স, অক্সিজেন, প্লাজমা, রক্ত ও খাদ্য সামগ্রী) নিয়ে এখনো অসহায় মানুষজনের পাশে আছি, এই সংগঠনের ব্যনারে আমরা “বিবেক আল আবরার” নামক একটি মাদ্রাসা স্থাপন করে অসহায় হতদরিদ্র পরিবারে সন্তানদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছি।
আজ ৩০শে মার্চ ২০২১ আমাদের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন “বিবেক” এর প্রতিষ্ঠার এক বছর পূর্ণ হলো, যেভাবে গত এক বছর “বিবেক” অসহায় মানুষের পাশে ছিলো ঠিক তেমনি আগামী দিনগুলোতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।
মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত আর সকলের দোয়াই আমাদের এই পথ চলার অনুপ্রেরণা।
ইউসুফ মোল্লা টিপু
প্রতিষ্ঠাতা “বিবেক”