সারাদেশের পেঁয়াজের বীজের চাহিদা মেটাতে চলতি মৌসুমে প্রস্তুত ফরিদপুরের কৃষকের মাঠ। পেঁয়াজ বীজে চাষিদের আশা, এ বছরও পেঁয়াজ বীজের বাম্পার ফলন হবে। তবে তারা বলছেন, গত মৌসুমের মতো এবারও যদি ন্যায্যমূল্য মিলে তবে ৫০০ কোটি টাকার বীজ বিক্রি করতে পারবেন তারা। এতে হাসি ফুটবে ‘কালো সোনা’খ্যাত পেঁয়াজ বীজ চাষিদের চোখেমুখে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া ঠিক থাকলে এই মৌসুমে এক হাজার ৫৬ টন পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করতে পারবেন এ জেলার চাষিরা, যা সরকারি সংগৃহীত পেঁয়াজ বীজের দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৭০ ভাগ।
দেশের পেঁয়াজের বীজের জন্য সুখ্যাতি রয়েছে ফরিদপুরের। আর তাই ফরিদপুরের নয়টি উপজেলার মধ্যে পাঁচটির ১ হাজার ৭১১ হেক্টর জমিতে এখন দেখা যায় পেঁয়াজ বীজ চাষের এমনই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। তাহিরপুরী/বারী-১ এবং লাল তীর কিং বীজ থেকে লাগানো এই পেঁয়াজ আবারো মাঠ থেকে বীজ হয়ে কৃষকের ঘরে আসবে মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই।
ফরিদপুরের অম্বিকারপুর ইউনিয়নের গোবিন্দুপুরের চাষিরা জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করছেন। তাদের মধ্যে চাষি ইমতিয়াজ মোল্লা জানান, ১০ বছর আগে শুরুতে দুই বিঘা জমি ছিল পেঁয়াজ চাষের। গত বছরের ২০ বিঘা, চলতি বছরের ৩০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছি। তবে গত বছরের মতো ভালো দাম পেলে এই ‘কালো সোনা’ খ্যাত বীজ আমি দুই কোটি টাকা বিক্রয় করতে পারব।
সালথার পেঁয়াজ বীজ চাষি নাছির হোসেন জানান, এলাকার অনেক বেকার এখন বীজের চাষ করছে। যার অল্প জমি রয়েছে সেও তার জমিতে পেঁয়াজের বীজের চাষ করছে। চলতি মৌসুতে সবার ক্ষেত ভালো হয়েছে। আশা করছি, ভালো উৎপাদন হবে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. হয়রত আলী জানান, কৃষি বিভাগ জেলার পেঁয়াজ বীজ চাষিদের নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকে।
তিনি জানান, এই মৌসুমে গত বারের তুলনায় ভালো উৎপাদন হবে। আশা করি চাষিরা মণপ্রতি যদি এক লাখ টাকাও পায় তবে আড়াইশ’ কোটি টাকার বেশি আয় করতে পারবে। তবে গত মৌসুমে তারা (চাষিরা) মণপ্রতি দুই লাখ টাকার বেশি দরে বিক্রয় করতে পেরেছে।
গত এক যুগ বছর ধরেই পেঁয়াজের বীজের যে চাষ করছেন ফরিদপুরের চাষিরা, যা দেশের ৭০ ভাগ চাহিদা পুরণ করে থাকে। তাই পেঁয়াজের বীজের চাষ ফরিদপুরে অব্যাহত রাখতে সরকারের আরো পৃষ্ঠপোষকতা আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ জাতীয় আরো খবর..