সবুজ অর্থায়ন খাতের শীর্ষে সরকারি ব্যাংক অগ্রণী ব্যাংককে এগিয়ে নেওয়ার নৈপথ্যের নায়ক ব্যাংকটির এমডি ও সিইও মোহাম্মদ শামস্۔উল ইসলাম। ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করার পর ব্যাংকটির দৃশ্যপট ও অবস্থান সম্পুর্ন পাল্টে যায়। গত চার বছরে খেলাপি ঋণ নামিয়ে এনেছেন অর্ধেকে। রেমিট্যান্স আহরণের শীর্ষে সব ব্যাংকের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে। ব্যাংকটির সকল পর্যায়ে সাফল্যের মুল নায়ক শামস্-উল ইসলাম।
দেশে করোনার সংক্রমনের শুরু হলে সংকটের মধ্যে পড়ে প্রায় সব ব্যাংক। সংকটের মধ্যে থেকেও অগ্রণী ব্যাংক সফলতা অর্জন করতে সফল হয় শামস- উল ইসলামের জন্যই। বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য নতুন নতুন পলিসি করেন । ঋণের সুদ আয় কমে যাওয়ায় ব্যাংক খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। এ সময় সুদহার কমে যাওয়ায় ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন তিনিই। আয়ের সব খাতসহ সুদ বহির্ভূত খাত যেমন ফরেন এক্সচেঞ্জ, এলসি, ট্রেজারি, সিন্ডিকেশন, তহবিল ব্যবস্থাপনা, রেমিট্যান্স, আমদানি-রপ্তানি ইত্যাদি ব্যবসায় নজর দিয়ে এক্ষেত্রগুলো দিয়ে অগ্রণী ব্যাংককে সাফল্য এনে দিয়েছে শামস্-উল ইসলাম।
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ভালো ব্যবসা করে অগ্রণী ব্যাংক। করোনা মহামারির কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও সার্বিকভাবে অর্ধবার্ষিকীতে ভালো ফলাফল আসে। চলতি অর্ধবার্ষিকীতে ব্যাংকটি পরিচালনায় মুনাফা হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩১৯ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮২ শতাংশ, যা সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অবস্থান তৈরিতে সহায়তা করেছে।
সরকারি ব্যাংক হিসেবে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স গ্রহনে সেরা অগ্রণী প্রবাসীরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠান। ২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান হয়ে ঢাকায় আসার পর শামস্-উল ইসলাম রেমিট্যান্সের বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মধ্যে রেমিট্যান্স আয়ে জনতা ব্যাংককে অতিক্রম করে এবং ২০১২ সালে সোনালী ব্যাংককে ছাড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এক নম্বরে পৌছায় অগ্রণী ব্যাংক।
বিদেশে প্রবাসীদের অর্থ সহজে দেশে আনতে বিভিন্ন মানি ট্রান্সফার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেন, এছাড়াও প্রবাসীদের জন্য আলাদা প্রণোদনা দেওয়া শুরু করে সরকার। প্রবাসীদের জন্য সরকার ঘোষিত ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনার সঙ্গে অগ্রণী ব্যাংক আরও ১ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার সিস্টেম চালু করা হয়। অর্থাৎ প্রবাসীরা এ ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রতি ১০০ টাকায় ৩ টাকা নগদ প্রণোদনা পায়, চলতি বছরের ঈদ পর্যন্ত প্রণোদনা দেওয়া হবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সালের মার্চে সিঙ্গাপুরের প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য একটি অ্যাপ চালু করা হয় । সিঙ্গাপুর থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে ভীষণভাবে সহযোগিতা করেছে অ্যাপটি। করোনার সময়ে তারা ঘরে বসেই টাকা পাঠাতে পারছেন। এই অ্যাপ প্রচলনের টাইমিংটা এতটাই চমৎকার ছিল যে অনেকেই জাহাজে আইসোলেশনে থেকেই টাকা পাঠাতে পেরেছেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অবকাঠামো, লজিস্টিকের উন্নয়নের জন্যই অগ্রণী ব্যাংকের প্রতি আস্থা বেড়েছে প্রবাসীদের।
দেশকে এগিয়ে নেয়া এবং এগিয়ে রাখার নিশ্চিয়তায় অবিরাম কাজ করে চলছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। এটি শুধুমাত্র মানি মার্কেট-এর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। পুঁজিবাজারকেও শক্তিশালীকরণের নিয়ামক শক্তি। সরকারের উন্নয়ন সহযোগী এ ব্যাংককে অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি আদর্শিক ইনস্টিটিউটের সাথে তুলনা করা চলে। বঙ্গবন্ধু কর্ণারসহ নানা সমাজ গঠনমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থেকে এ ব্যাংক আমাদের জাগিয়ে দিয়েছে যে, সমাজ রাষ্ট্রের একজন নাগরিকের অনেক করণীয় আছে। বর্তমান সময়ে গ্রাহকদের মতামত অনুযায়ী গ্রাহকরা মনে করেন অগ্রণীর সেবা অন্য আরও দশটা ব্যাংকের থেকে এগিয়ে রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো আদর্শের কিয়দাংশ হয়তো অগ্রণী ব্যাংক দেখিয়েছে। যার বাস্তবায়ন করেছেন ব্যাংকটির এমডি ও সিইও শামস্-উল ইসলাম।
একজন শামস্-উল ইসলামের অক্লান্ত পরিশ্রম ও নির্ভুল পরিকল্পনার ফলে অগ্রণী ব্যাংক সফলতার সিড়িতে পৌঁছায়। এ প্রেক্ষিতে সরকার এ ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু কর্ণারের আদলে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে একজন বঙ্গবন্ধু প্রেমিক শামস্-উল ইসলামের ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে সম্মানিত করেছে। ভবিষ্যতেও অগ্রণী ব্যাংক ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম জাতির জনকের স্বপ্নগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে জাতিকে আলোর পথ দেখাবে।