বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী উচ্চশব্দ সৃষ্টি করা ও প্রচার উচ্চ শব্দের ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। অথচ প্রতিদিনই বিভিন্ন কর্মসুচি , গায়ে হলুদ, ঈদ, পহেলা বৈশাখ, সভা-সমাবেশসহ সকল অনুষ্ঠানে ৭০ ডেসিবল শব্দসীমার মধ্যে থেকে কাজ করতে হবে এবং শেষ করতে হবে রাত দশটার মধ্যে। রাত দশটার পর কোন উচ্চশব্দের কোন আয়োজন কেউ করতে চাইলেও তা সাউন্ডপ্রুফ হল রুমে করতে হবে। গাড়ির হর্ণের শব্দও ৫০-৬০ ডেসিবলের মধ্যে থাকবে। আজান সর্বোচ্চ ৮০-৯০ ডেসিবলের মধ্যে প্রচার করতে হবে। আইন করে আইনের ব্যবহার না হলে এই আইন সমাজের দেশের কি কাজে আসবে?
শব্দ দূষণ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অন্তরায়। দেশের বিশাল জনসংখ্যার একটি অংশ প্রতিনিয়ত উচ্চ মাত্রার শব্দ দূষনের মধ্যে বসবাস করছে, যা শিশুদের এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং পরিবেশ অধিদপ্তর রাজধানী ঢাকাসহ কিছু জেলা শজরে শব্দের মাত্রাকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
বিধিমালায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পেয়ে আবাসিক এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ মানমাত্রা অতিক্রম করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে আবাসিক এলাকায় দিনের বেলায় ৫৫ ডেসিবেল ও রাতের বেলায় ৪৫ ডেসিবেলের বেশি শব্দ অতিক্রম করতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের তেমন প্রয়োগ দেখা যায় না বললেই চলে।
আমাদের অসচেতনতা ও ভুলের জন্য শিশুদের সঠিক বিকাশে বাঁধাগ্রস্থ হলে আজকের শিশুরা আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলা কখনও সম্বভ হবে না। আজকের শিশুদের কাজ থেকে আগামি সুন্দর বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য আসুন আমরা সবাই আইন মেনে চলি।
লেখক: রুবায়েত হোসেন