দুদকের নতুন চেয়ারম্যান হলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহুরুল হক। বুধবার( ৩ মার্চ) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদের জারি করা গেজেট প্রকাশ করা হয়।
দুদকের বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের মেয়াদ আগামী ১৩ মার্চ শেষ হচ্ছে। একই সঙ্গে কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলামের মেয়াদও শেষ হচ্ছে। তারই প্রেক্ষিতে গত ২৮ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও একজন কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ দিতে বাছাই কমিটি করে সরকার।
দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়ার আগ পর্যন্ত মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)র’ দশম ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ পদে তিনি ৩ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করে তাকে দুদকে যোগদান করতে হবে।
নব নিযুক্ত দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ টানা ৩৫ বছর সিভিল সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৩ সালে জনপ্রশাসনে যোগদান করেন। ২০১৮ সালের আগস্টে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসরে যান। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। এর বাইরে তিনি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আবদুল্লাহ ১৯৫৯ সালে কুমিল্লায় জন্ম গ্রহন করেন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৭ সালে তিনি স্কাউটস কর্তৃক ‘রুপালি ইলিশ’ পদকে ভ‚ষিত হন। কৃষি মন্ত্রণালয়ে থাকাকালে মন্ত্রণালয়ের ‘অনার্ড বোর্ড’ থেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর নাম মুছে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে আলোচিত হন।
অন্যদিকে মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হক ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ৩০ আগস্ট বিটিআরসির কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ (সিনিয়র জেলা জজ) হিসেবে অবসরে যান। মো. জহুরুল হক ১৯৫৫ সালের ৫ ডিসেম্বর জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে জেলার মাদারগঞ্জ পলিশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৭৩ সালে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮০ সালে অনার্স এবং ১৯৮১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালে সহকারি জজ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, পিলখানা হত্যা মামলা, হলমার্ক এবং ডেসটিনি মামলার বিচারক ছিলেন তিনি।