সংবাদকর্মী থেকে পৌর মেয়র হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা। উত্তরের জেলা দিনাজপুরের সুইহারিতে জন্মগ্রহণ করেন আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা। পরিবারের ছয় বোন ও এক ভাইয়ের সবার ছোট তিনি।
বন্যার শিক্ষাজীবন শুরু হয় দিনাজপুরের মিশন স্কুলে। সেখানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার পর রাণীবন্দরের জেডি হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। দিনাজপুর আদর্শ কলেজ থেকে পাশ করেন এইচএসসি। এরপর থেকেই সম্পৃক্ত হন রাজনীতিতে। পরবর্তীতে এলএলবি পাস করেন রাজশাহীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
এরইমধ্যে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের হরিহর গ্রামের এটিএম শামসুজ্জোহা (সাংবাদিক) বাবলুর সঙ্গে ১৯৯২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বন্যা। বিবাহের পর ঠাকুরগাঁওয়ের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের হাত ধরে সেই সময়ে জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি শহরের হাজীপাড়ায় স্বামীর বাসা এলাকায় সুইট বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ও অটিষ্টিক বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। সেই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা ও স্বামী বাবলুর পরিচালনায় স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
জেলায় রাজনীতি করার পাশাপশি জাতীয় দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার শুরু থেকে জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। এরইমধ্যে পত্রিকায় কাজ করার পাশাপাশি কিছুদিন জেলা প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে কাজ করেছেন।
জেলার প্রবীণ সাংবাদিক বাবুল দৈনিক যুগান্তর ও চ্যানেল আই’তে এখনও কর্মরত। মেয়র হওয়ার আগেও স্বামী-স্ত্রী দুজনেই সাংবাদিকতা পেশায় ছুটে বেড়িয়েছে পুরো জেলা। এছাড়া বন্যা জেলা সদরে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দুবার ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও নির্বাচিত হতে পারেননি। সাংবাদিকতার পেশায় থেকেও প্রতিবন্ধী স্কুল ও রাজনৈতিক কাজে রাজধানী ঢাকায় নেতাদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়েন।
পরিশেষে ঠাকুরগাঁও সদর পৌরসভা নির্বাচন (২০২১) এ জেলার হেভিওয়েট নেতাদের সঙ্গে তিনিও মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তে আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যাকে নৌকা প্রতীক প্রদান করা হয়। এতে ভাগ্য ফিরে তার। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে জয়লাভের মধ্য দিয়ে ‘পৌর মাতা’ নির্বাচিত হন।
স্বামী এটিএম শামসুজ্জোহা বাবলু জানান, বন্যা এখনও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। যেহেতু সে মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। পরবর্তীতে সাংবাদিকতা করবে কিনা সিদ্ধান্ত নেবে।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ছোট বোনের মতো দেখেন। দল মনে করেছেন আমি মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য, তাই দিয়েছেন। আর পৌরবাসী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আমাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করেছেন। আমি আগামী ৫ বছর জনগণের সেবায় কাজ করবো।
এ জাতীয় আরো খবর..