জননিরাপত্তা বিধানে পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা আরও বাড়াতে বাংলাদেশ পুলিশে যুক্ত হচ্ছে দুটি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার। এর মধ্য দিয়ে পুলিশের এয়ার উইংয়ে হেলিকপ্টার সংযোজনের ক্ষেত্রে উন্মোচিত হলো এক নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশ পুলিশে হেলিকপ্টার সংযোজনের ফলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পুলিশের কার্যক্রমে ব্যাপক গতিশীলতা আসবে, যার সুফল ভোগ করবেন দেশের জনগণ।
হেলিকপ্টার সংযোজনের ফলে দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা এবং নজরদারি বাড়ানোর ক্ষেত্রে পুলিশ আরও দক্ষতার সাথে তাৎক্ষণিক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
হেলিকপ্টার দুটি গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট (জি টু জি) পদ্ধতিতে রাশিয়া থেকে কেনার জন্য বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের শাপলা কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ পুলিশ এবং হেলিকপ্টার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টারর্স এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এবং রাশিয়ান হেলিকপ্টারর্স এর মহাপরিচালক আন্দ্রে আই. ভোগেনিস্কি (A I. BOGINSKY) ভিডিও কনফারেেন্সের মাধ্যমে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাগণ এবং বাংলাদেশস্থ রাশিয়ান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিআইজি (লজিস্টিকস) জনাব তওফিক মাহবুব চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং রাশিয়া পরস্পর পরীক্ষিত বন্ধু ও বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাংলাদেশের সাথে রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রূপপুর আণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কার, সেনাবাহিনী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে রাশিয়া বিশেষভাবে সহযোগিতা করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার সংযোজনের ফলে দেশে জনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জননিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে পুলিশের সক্ষমতা আরও বাড়বে, যা বাংলাদেশকে নিরাপদ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনন্য মাত্রা যোগ করবে।
সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন বলেন, দেশের জনগণের নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রথমবারের মতো পুলিশে দুটি হেলিকপ্টার সংযোজনের ফলে জনগণের নিরাপত্তা বিধানের ক্ষেত্রে আরও গতিশীলতা আসবে।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার) বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে হেলিকপ্টার সংযোজনের মধ্য দিয়ে পুলিশের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত এয়ার উইং চালুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এর ফলে জরুরি অপারেশন পরিচালনায় পুলিশ সদস্যদের পরিবহন, খাদ্য ও ওষুধ সামগ্রী সরবরাহ এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম সম্পাদনে পুলিশের সক্ষমতা আরও বাড়বে।
তিনি বাংলাদেশ পুলিশে হেলিকপ্টার সংযোজনে সদয় অনুমোদন প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।
রাশিয়ান হেলিকপ্টারর্সের মহাপরিচালক আন্দ্রে আই. ভোগেনিস্কি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রাশিয়ার সাথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পারষ্পারিক সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশকে হেলিকপ্টার সরবরাহের মাধ্যমে এ সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।