মসজিদের দান বাক্সে কোটি টাকা, স্বর্ণালঙ্কার আর বিদেশি মুদ্রা। কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দান বাক্সে এবারও মাত্র ৫ মাসে খুলে পাওয়া গেছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫হাজার ৫৪৫ টাকা। পাওয়া গেল স্বর্ণালঙ্কারসহ বিদেশি মুদ্রা।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) খোলা হয় মসজিদের ৮ টি লোহার দানবাক্স। বড় বড় লোহার সিন্দুক খুলে ১৭ টি বস্তায় ভরে বের করা হয় টাকা। বস্তা ভর্তি টাকা মসজিদের মেঝেতে ঢেলে দিনভর গণনার এমন আয়োজন চোখে পড়ে শহরের দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদে। স্থানীয় একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মসসজিদ ক্যাম্পাস মাদরাসার শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয় ঐ টাকা গণনার কাজে। ৫ মাসের ব্যবধানে মিলেছে দানের নগদ ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫হাজার ৫৪৫ টাকা। এর আগে, গত ২৩ আগস্ট দানবাক্সে পাওয়া যায় ১ কোটি ৭৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ১০৯ টাকা ।
জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গননা শেষ হয়। কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল্লাহ আল মাসউদের নেতৃত্বে কালেক্টরেটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে টাকা গণনা করা হয়।
পাগলা মসজিদে দান করলে মনের ইচ্ছে পূরণ হয়, এমন বিশ্বাসে মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের লোকজন এখানে দান করে থাকেন। নগদ টাকা ছাড়াও পাওয়া যায়, চাল,ডাল, গবাদিপশু আর হাঁস-মুরগি। এসব পণ্য নিলামে বিক্রি করে প্রাপ্ত টাকা জমা করা হয় মসজিদের ব্যাংক একাউন্টে।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, মসজিদের আয় থেকে নিজস্ব খরচ মিটিয়েও জেলার বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসা এতিমখানাসহ গরীব ছাত্রদের মাঝে ব্যয় করা হয়। টাকা দেয়া হয় নানা আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ডেও।
জনশ্রুতি আছে, ৫০ বছর আগে পাগলবেশী এক সাধু পুরুষ নরসুন্দা নদীর মাঝখানে পানিতে মাদুর পেতে আশ্রয় নেন। তার মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে পাগলা মসজিদ নামে পরিচিতি পায় মসজিদটি।