প্রেমের টানে প্রেমিকাকে (১৩) নিয়ে শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে পালিয়ে ভারত যাচ্ছিলেন প্রেমিক শিপন মালাকার (১৭)। কিন্তু পথিমধ্যে প্রাণ হারাতে হল শিপনকে।শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে সীমান্তবর্তী নো ম্যান্সল্যান্ডে গায়ের গেঞ্জি দিয়ে গাছের ডালে ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া গেছে তার লাশ। আর সেই লাশ পাহারা দিচ্ছিল তারই প্রেমিকা। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়।
জানা গেছে, কুলাউড়ার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সিন্ধু মালাকারের ছেলে শিপন মালাকারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা এক স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবার তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় গত ২৫ ডিসেম্বর পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা ভারতে চলে যাওয়ার উদ্দেশে সীমান্তবর্তী এওলাছড়া পুঞ্জির গহীন বনে চলে যায়। সেখানে বেশ কিছু সময় অবস্থান করে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতেই প্রেমঘটিত কারণে মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে শিপন আত্মহত্যা করেছে।
লাশ পাহারারত কিশোরী প্রেমিকা বলে, শুক্রবার বিকেলে শিপন আমাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর রাতে এওলাছড়া পানপুঞ্জির গহীন জঙ্গলে আমরা অবস্থান করি। এক পর্যায়ে রাত প্রায় ২টায় শিপনের কাছ থেকে পাহাড়ের নিচে আমি ছিটকে পড়ে যাই। তখন থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা আমি অজ্ঞান ছিলাম। শিপনকে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। সকালে উঠে দেখি তার গেঞ্জি দিয়ে গাছের ডালে ফাঁস লাগানো। আমাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল দুই বছরের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পৃথিমপাশা ইউপি চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান, কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক, স্থানীয় ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠান, হাজি মাকসুদ আলী, আব্দুল মনাফ প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে কুলাউড়া থানার এসআই মহসীন তালুকদার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে গাছের ডালের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় লাশের পাশে পাহারারত অবস্থায় ওই কিশোরীকে পাওয়া গেছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। শিপন মালাকারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের সঙ্গে পাওয়া কিশোরীকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।