দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মালি রবিউল ইসলামের রক্তের সঙ্গে জেলার অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জব্দ করা আলামত পরীক্ষার ফলাফলে পজিটিভ এসেছে।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এ চাঞ্চল্যকর মামলার সিআইডির আগত পাঁচ সদস্য টিমের সংগ্রহকৃত আলামত তাদের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। আসামি রবিউলের গায়ে থাকা রক্তমাখা কাপড়ের সঙ্গে ইউএনও ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবা ওমর আলী শেখের রক্তমাখা কাপড় পরীক্ষায় ফলাফল পজিটিভ পাওয়া গেছে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবু ইমাম জাফর জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা সিআইডি সদর দপ্তর থেকে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ টিম এই চাঞ্চল্যকর মামলার আলামত জব্দ করতে দিনাজপুরে আসেন। তারা পাঁচ দিনব্যাপী এখানে ঘটনাস্থল থেকে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার রক্তমাখা জামাকাপড় এবং গ্রেফতারকৃত আসামি রবিউল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত আটটি প্যান্ট জব্দ করা হয়। ওই জব্দকৃত প্যান্টগুলোর মধ্যে একটি প্যান্টে রক্তের দাগ পাওয়া যায়। ওই রক্ত মাখা প্যান্ট এবং ইউএনও ওয়াহিদা খানম এবং তার বাবার রক্তমাখা কাপড় সিআইডির ল্যাবে পরীক্ষা করে ফলাফল পজিটিভ পাওয়া যায়।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, সংগ্রহকৃত আলামত থেকে রবিউলের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে সিআইডির পরীক্ষায় প্রেরিত প্রতিবেদনে মতামত দেয়া হয়েছে।
ডিবি পুলিশ সূত্রটি জানায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর রবিউলকে ৯ দিন রিমান্ড শেষে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল হোসেনের নিকট স্বেচ্ছায় কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় ৯ পৃষ্ঠার জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দিতে উল্লেখযোগ্য ও প্রতিশোধ নেয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রবিউল বলেছেন।
এ সময় ইউএনওর বাবা ওমর আলী শেখ বাধা দিতে আসায় তাকেও রবিউল হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেছিল। এই তথ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হিসেবে তদন্তে আমলে নেয়া হয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রবিউলের বড় ভাই ও তার ভগ্নিপতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য যে, গত ২ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখকে বাসায় প্রবেশ করে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইউএনও বড় ভাই ফরিদউদ্দিন শেখ বাদী হয়ে ওই দিন দুপুরে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা তদন্তকালে ঘটনার দায় স্বীকার করে বিচারকের নিকট জবানবন্দি দেয়া আসামি রবিউলসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।