জাতীয় নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। সব পক্ষই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। একইসঙ্গে দুর্নীতিবাজদের অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগ আলোচিত হচ্ছে সর্বত্র। সেইসঙ্গে অর্থপাচার ঠেকানোসহ দুর্নীতিবাজদের ধরতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এরমধ্যে দুর্নীতিবাজদের ধরতে খুব শিগগিরই ঝটিকা অভিযান চালাতে মাঠে নামছে দুদক। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে দুদক এ বিষয়ে একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে। ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুদক এ ধরনের ঝটিকা অভিযান চালিয়ে দুর্নীতিবাজদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সেই ধরনের অভিযান আবারও শুরু করতে চায় দুদক।
দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গত মাসে (এপ্রিল) কমিশনের এক বিশেষ সভায় সিদ্ধান্ত হয়—দুদকের দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রমকে বিভিন্ন পর্যায়ে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজদের তাৎক্ষণিক আইনের আওতায় আনতে কমিশনের স্ট্যান্ডবাই একটি টিম থাকা দরকার—যা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পরিচিত হবে। এছাড়া জনগুরুত্বপূর্ণ, বহুল আলোচিত ও স্পর্শকাতর অনুসন্ধানসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলা এবং ‘ফাঁদ মামলা’ পরিচালনার ক্ষেত্রেও একটি শক্তিশালী টিম থাকার বিষয়ে কমিশন প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এরপরই কমিশনের বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের অধীন দক্ষ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
এরপরই দুদকের বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের অধীনে গোয়েন্দা ইউনিটের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদকে প্রধান করে এই বিশেষ টিম গঠন করা হয়। তার নেতৃত্বে এই টিমের কর্মকর্তাদের সাধারণ অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজে নিয়োজিত না করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। শুধু বহুল আলোচিত, স্পর্শকাতর, ফাঁদ মামলার অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে তারা অভিযান চালাবে।
দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান আব্দুল্লাহ আল জাহিদ ছাড়াও এই টিমে রয়েছেন—মানিলন্ডারিং বিভাগের পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী, একই বিভাগের বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিষয়ক শাখার উপ-পরিচালক ফারুক আহমেদ, বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-৩-এর উপ-পরিচালক সেলিনা আক্তার মনি, মানিলন্ডারিং বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন, উপ-পরিচালক তানজির হাসিব সরকার, বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-২ শাখার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী এবং মানিলন্ডারিং শাখার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নূর আলম সিদ্দিকী। তবে তদন্ত ও অভিযানের স্বার্থে প্রয়োজনে তারা আরও কর্মকর্তাকে এই টিমে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় কমিশন থেকে।
দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) মোজাম্মেল হক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই আমরা অভিযান শুরু করবো। ডাইরেক্ট অ্যাকশনে যাবো। তবে এই ডাইরেক্ট অ্যাকশন বা ঝটিকা অভিযানের সঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে দুর্নীতি হবে, সেখানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে দুর্নীতিবাজদের ধরার চেষ্টা করবো। পরবর্তী ব্যবস্থা হিসেবে আইনি প্রক্রিয়াগুলো গ্রহণ করা হবে।’
দুদকের এই কমিশনার আরও বলেন, ‘অতীতেও (ওয়ান-ইলেভেনের সময়) এমন টিম কাজ করেছে। তখন যেসব ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে, সেগুলোর যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সেদিকটি আমাদের বিবেচনায় থাকবে। তখন দুদক যেসব কাজ করে সুফল পেয়েছিল, সেগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। বিট্রি