বায়রার মহাসচিবকে অপসারণের সিদ্ধান্ত বাতিল
জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস-বায়রার মহাসচিব পদে থাকা শামীম আহমেদ চৌধুরীকে কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে অর্থসচিব পদে বহাল হয়েছেন মিজানুর রহমান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন উইংয়ের আপিল শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সুবর্ণা সরকারের সই করা চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বায়রার ৩২তম বার্ষিক সাধারণ (মূলতবি) সভায় উপস্থিত সদস্যদের উত্থাপিত দাবির মুখে শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান ও মিজানুর রহমানকে তাদের স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণের দাবি জানানো হয়। পরে শামীম আহমেদ তার পদ থেকে পদত্যাগ করে চিঠি পাঠান বায়রা সভাপতির কাছে। এরপর কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডেকে তাকে মহাসচিব পদ থেকে অপসারণের ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। সেখানে নতুন মহাসচিব হিসেবে আলী হায়দার চৌধুরীকে এবং অর্থ সচিব করা হয় মো. বেলাল হোসেন মজুমদারকে। একইভাবে ওই সভায় বায়রার প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মোহা. নূর আলীকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বায়রার কমিটিতে এমন পরিবর্তনের অভিযোগ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকের (বাণিজ্য সংগঠন) কাছে লিখিতভাবে জমা দেওয়া হয় গত ২২ ফেব্রুয়ারি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়— সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাদের অপসারণ করা হয়। চলমান শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য-২ শাখা থেকে শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান ও মিজানুর রহমানের অপসারণকে অবৈধ ঘোষণা করে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর বায়রার এজিএম হওয়ার কথা। কিন্তু, করোনাকালের দুই বছরসহ এবং কমিটি না থাকার কারণে আরও দুই বছর (প্রশাসক) মোট চার বছর কোনও এজিএম হয়নি। কোম্পানি আইন অনুযায়ী, পূর্ববর্তী বছরে এজিএম না হলে আদালতের অনুমতি নিয়ে এজিএম করতে হয়। কিন্তু বায়রার বর্তমান কমিটি গত ফেব্রুয়ারিতে যে এজিএম করেছে, তাতে কোনও অনুমোদন ছিল না। ফলে ওই এজিএম কোম্পানি আইনের বিধান পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে বলা হয়, প্রচলিত বিধান অনুযায়ী, কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান ছাড়া সভায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সঠিক নয় বলে বিবেচিত হয়েছে। ফলে শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান (মহাসচিব) এবং মিজানুর রহমান (অর্থ সচিব)-এর কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বহিষ্কার আদেশ বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ১৫(৩) (চ) ধারার ক্ষমতাবলে বাতিল করা হলো। বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক অবিলম্বে কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর বিধান প্রতিপালন পূর্বক বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, ‘আমাদেরকে এভাবে একটা সভা ডেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই নিতে পারে না। আমি পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর সেটি গ্রহণ না করে আমাকে অপসারণ করার কথা যখন বলা হলো, আমি তখন পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমাদের অভিভাবক। যখন সেখানে একটি অভিযোগের শুনানি চলছে, তাদের কাছ থেকে অনুমোদন না নিয়ে নতুন করে কাউকে একই পদে বসাতে পারে না। যা করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অনৈতিক কাজ।’