সৌদি মুদ্রা রিয়াল কম টাকায় কেনার ফাঁদে পড়ে ৯ লাখ টাকা খোয়ালেন এক চিকিৎসক। বিনিময়ে পেলেন গামছায় মোড়ানো সাদা কাগজ। এমন অভিনব প্রতারণার অভিযোগে চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো লিয়াকত (৩৫), মিরাজ তালুকদার (৫০), মো. আহাদ শেখ (৫৮), হায়দার মৃধা (৫৭), মফিজুল মিয়া (৩৫) এবং ইমারাত মোল্লা (৬১)।
শুক্রবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি জানান, শাহিন (ছদ্মনাম) নামের এক চিকিৎসক গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ দিয়ে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি সৌদি রিয়াল কোথায় ভাঙানো যায়, শাহিনকে জিজ্ঞেস করে। শাহিন ওই ব্যক্তিকে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে এআর মানি এক্সচেঞ্জ দেখিয়ে দেন। তখন পথ দেখিয়ে দিলেও সঙ্গে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে ব্যক্তিটি।
অনুরোধ রাখতে শাহিন ওই ব্যক্তির সঙ্গে মানি এক্সচেঞ্জে যান। সেখান থেকে ১০০ রিয়াল পরিবর্তন করে টাকা নেন ওই ব্যক্তি। এআর মানি এক্সচেঞ্জ থেকে বের হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি শাহিনকে জানায়, তার কাছে আরও ৯ লাখ সৌদি রিয়াল আছে, যা মানি এক্সচেঞ্জের চেয়ে একটু কম মূল্যে ৯ লাখ টাকায় দিতে পারবেন।
এমন প্রস্তাবে শাহিন ব্যক্তির কাছ থেকে রিয়াল নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর ১ মার্চ লোকটি শাহিনকে ফোন করে রিয়াল নিতে বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে যেতে বলে। কথামতো তিনি সেখানে যান। তখন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির সঙ্গে আসা দুজন তাকে একটি ব্যাগ দেয়। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি জানায়, ব্যাগের মধ্যে ৯ লাখ রিয়াল আছে। চিকিৎসকও সরল বিশ্বাসে ৯ লাখ টাকা দিয়ে দেন। বাসায় গিয়ে ব্যাগটি খুলে ভেতরে গামছা দিয়ে মোড়ানো টুকরা পেপার দেখতে পান। পরে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে বনানী থানায় মামলা করেন চিকিৎসক।
ওসি আরও বলেন, মামলার পর বনানী থানা পুলিশ গত ২১ মে গোপালগঞ্জ থেকে লিয়াকত নামে একজনকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে চক্রের বাকি পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ প্রতারণা করছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগার পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।