গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন বলেছেন, ‘জনগণ আমার পাশে আছে। প্রচারণা শুরু হলে সব ওয়ার্ডে যাবো। সব পেশার মানুষের কাছে ভোট চাইবো। আমার চাওয়া-পাওয়ার কথা তাদের বলবো। আশা করছি, সবার সমর্থন পাবো।’
তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বলেছেন, ‘জনগণ তাদের পাশে নেই, আছে আমাদের পাশে।
শনিবার (০৬ মে) দুপুরে মহানগরের ছয়দানার বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জায়েদা খাতুন। তিনি সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা। এ সময় মায়ের পাশে ছিলেন জাহাঙ্গীর। বিট্রি
একটি মহল মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ছেলেকে ১৮ মাস ধরে স্তব্ধ করে রেখেছে অভিযোগ করে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘তার সব কিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মা-ছেলেকে জনগণ কতটা ভালোবাসে, তা দেখার জন্য ভোটে দাঁড়িয়েছি। যদি নির্বাচিত হই, তাহলে যেসব কাজ অসম্পূর্ণ পড়ে আছে, সেগুলো শেষ করবো।’
প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে নগরের বাসিন্দাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছিল। নগরের রাস্তাঘাটের অনেক উন্নয়ন করেছে। কিন্তু কিছু মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ষড়যন্ত্র করে ছেলেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছেলের বিরুদ্ধে অন্যায় করা হয়েছে। এই অন্যায়ের প্রতিবাদে মাঠে নেমেছি। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবো।’
একই দিন সকাল ১০টায় টঙ্গীর বাসভবনে নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান। এ সময় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে স্বাগত জানিয়ে আজমত উল্লা বলেন, ‘আমি যেকোনো প্রার্থীকে স্বাগত জানাই। যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি। কাউকে ছোট করে দেখি না, বড় করেও দেখি না। মানুষ উন্নয়নের জন্য ভোট দেবে। দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশন গড়তে ভোট দেবে। ফলে জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, তাদের (জাহাঙ্গীর ও তার মা জায়েদা) সঙ্গে নেই।
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে আজমত উল্লা বলেন, ‘আমাকে তলবের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণিত হয়েছে। আমি কোনও আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করেছি। নির্বাচনি এলাকার বাইরে কোনও কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবো কিনা জানতে চেয়েছি। তারা আমাকে বলেছেন, নির্বাচনি এলাকার বাইরেও তা করা যাবে। ফলে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আমার অবস্থান তুলে ধরবো। আমার বিশ্বাস, ইসিকে সঠিক ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাতে সক্ষম হবো। আচরণবিধি-২০১৬-এর দুটি ধারা উল্লেখ করে আমাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারও ব্যাখ্যা দেবো।’
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন জাহাঙ্গীর আলম। সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাইয়ে ঋণখেলাপি হওয়ায় জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। তবে জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
অপরদিকে, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আজমত উল্লা খানের প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না, সে বিষয়ে তার ব্যাখ্যা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত বৃহস্পতিবার ইসির এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রবিবার (৭ মে) আজমত উল্লা সশরীরে ইসিতে যাচ্ছেন।
একই দিন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে যাওয়ার কথা রয়েছে জাহাঙ্গীর আলমের। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও বিভাগীয় কমিশনার আপিল খারিজ করেছেন। এখন হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাবো। প্রার্থিতা ফিরে না পেলে মায়ের সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকবো।