কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে ১৯ বস্তা টাকা। এ ছাড়া কিছু বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণ পাওয়া গেছে। এখন টাকা গণনা চলছে। চার মাস পর শনিবার (৬ মে) সকালে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ ও দানবাক্স খোলা কমিটির সদস্যরা।
সর্বশেষ এই মসজিদের দানবাক্স খোলা হয় জানুয়ারির ৭ তারিখ। সেদিন ২০ বস্তায় ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া যায়। যা মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর সর্বোচ্চ।
গতবারের তুলনায় এবার ২৪ দিন বেশি সময়ের ব্যবধানে দানবাক্স খোলা হলো।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এডিএম কাজী মহুয়া মমতাজ জানান, দানবাক্স খোলা হয়েছে সকাল সাড়ে ৮টায়। টাকা প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। পরে সেগুলো মেঝেতে ঢেলে গণনার কাজ শুরু করা হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, এবার ১৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে পরিগণিত হবে। এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ কোটি টাকা। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এ ছাড়া ৫ হাজার নারীর জন্য নামাজের আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।
পাগলা মসজিদের সেক্রেটারি কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, ‘মসজিদ নিয়ে অনেকে প্রতারণার সুযোগ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মসজিদের পক্ষ থেকে বিকাশ, নগদ বা ব্যাংক হিসাবে টাকা নেওয়া হয় না। সবাইকে সতর্ক থাকাতে মসজিদ প্রাঙ্গণে নোটিস টাঙানো হয়েছে। এবার গণনা শেষে যে টাকা পাওয়া যাবে, তা রূপালী ব্যাংকে জমা করা হবে। ’
পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এসব টাকা গণনা করে থাকেন। রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চূড়ান্ত গণনার পর এই ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে টাকা জমা দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অহনা জিন্নাত, সুলতানা রাজিয়া, শেখ জাবের আহমেদ, রাকিবুল ইসলাম, রওশন কবীর, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা, মসজিদের ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম টাকা গণনার কাজ তদারক করছেন।
এবার দানের অর্থের পরিমাণ ৪ কোটির বেশি হবে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ জাবের আহাম্মদ, সিরাজুল ইসলাম, নাবিলা ফেরদৌস, সাদিয়া আফরিন তারিম, কমিটির সদস্য আনোয়ার কামাল, রুপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম, উপমহা ব্যবস্থাপক শাহেদুর রহমান খান প্রমুখ।